খুলনা | শুক্রবার | ১৮ জুলাই ২০২৫ | ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

খালেদা জিয়ার মুক্তি আপাতত হাসপাতালে

খবর প্রতিবেদন |
০১:৫৪ এ.এম | ০৭ অগাস্ট ২০২৪


২০১৮ সালের ৮ ফেব্র“য়ারি কারাগারে যাওয়ার পর এবার মুক্ত হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি’র চেয়ারপারসন খালেদ জিয়া। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় এ তথ্য জানান বিএনপি’র মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বেগম জিয়ার মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশের নয়।’ 
এদিকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুরক্ষা সেবা বিভাগ কারা-২ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ আবু সাঈদ মোল­ার সইয়ে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করে মুক্তির বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের ক্রিমিনাল আপিল নং-১৬৭৬/১৮ (বিশেষ আদালত নং-৫, ঢাকা-এর বিশেষ মামলা নং-১৭/২০১৭ থেকে উদ্ভূত) এবং বিশেষ আদালত নং-৫, ঢাকা-এর বিশেষ মামলা নং-১৮/২০১৭-এ প্রদত্ত দণ্ডাদেশ মওকুফ করে নির্দেশক্রমে মুক্তি দেওয়া হলো।’
২০১৮ সালের ৮ ফেব্র“য়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। এরপর অসুস্থতার কারণে কিছু দিন বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা নেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মুখে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার শর্ত ছিল তিনি তার বাসাতেই অবস্থান করবেন এবং ঢাকাতেই চিকিৎসা করাবেন। ফলশ্র“তিতে শর্ত মেনে ওই বছরের দু’টি ঈদ তিনি তার ভাড়া করা বাসভবন ফিরোজায় কাটান।
মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনারা জানেন, ম্যাডাম খুব অসুস্থ। আমি সোমবার রাতে দেখা করেছি...। সুতরাং যখনই তিনি ফিট মনে করবেন, সুস্থবোধ করবেন, তখন তিনি জনগণের সামনে উপস্থিত হবেন।’
দলীয় সূত্র জানায়, আপাতত বিএনপি চেয়ারপারসনের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। 
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে শায়রুল কবির বলেন, ‘আপাতত হাসপাতালেই চিকিৎসা চলবে ম্যাডামের।’
সাক্ষাতে জামায়াতের আমির : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডাঃ শফিকুর রহমান। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উপস্থিত ছিলেন। সোমবার রাতে সাক্ষাৎ করেন তারা।
এর আগে বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। 
সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন করা হবে। আর বর্তমানে যে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেটি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী পদক্ষেপ নেবে। এ ছাড়া সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অনতি বিলম্বে মুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। সোমবার রাষ্ট্রপতির প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। 
জানা গেছে, সভায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গ্রহীত হয় এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করা হয়। 
এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এবং স¤প্রতি বিভিন্ন মামলায় আটক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি যেন কোনো ভাবেই বিনষ্ট না হয় সে ব্যাপারেও সভায় আলোচনা হয়।