খুলনা | শুক্রবার | ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

‘ক্লিনিক্যালি ডেথ’ ব্যাংকগুলো মরে যেতে দেওয়া উচিত : সিপিডি

খবর প্রতিবেদন |
০২:২৪ পি.এম | ১২ অগাস্ট ২০২৪


কিছু ব্যাংক মৃতপ্রায় আর অনেক ব্যাংক ‘ক্লিনিক্যালি ডেথ’ হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ, সিপিডি। মৃতপ্রায় ব্যাংকগুলোকে ফের একবার সচল করার চেষ্টা করা যেতে পারে বলেও সুপারিশ এসেছে সংস্থাটির কাছ থেকে।

এজন্য মৃতপ্রায় ব্যাংকগুলোর বর্তমান ব্যবস্থাপনায় ও পরিচালক পর্ষদে বদল করার পরামর্শ দিয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘অনেক ব্যাংক ক্লিনিক্যালি ডেথ হয়ে গেছে। এসব ব্যাংক আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।

স্বাভাবিকভাবে এদের মরে যেতে দেওয়া দরকার। সরকার এসব ব্যাংকগুলোকে অর্থ দিয়ে, মূলধন দিয়ে পুনর্ভরণ করে চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে শুধু দেশের অর্থ অপচয় হচ্ছে। কাজে আসছে না।’

আজ সোমবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজস্ব কার্যালয়ে ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে করণীয়’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। মৃতপ্রায় ও ক্লিনিক্যালি ডেথ হওয়া ব্যাংকের সংখ্যা না জানালেও ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ১১টি ব্যাংক আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্যাসেল নীতিমালা অনুযায়ী বিভিন্ন হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলো ক্লিনিক্যালি ডেথ হয়ে গেছে। এক সময়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ভালো ব্যাংক ছিল। এটিকে দখলের পরে মুমূর্ষু হয়ে গেছে।’

স্বাধীনতার পরে দেশের অর্থনীতি অনেক খারাপ ছিল। তখন দেশের ব্যাংক খাত অর্থনীতি সাজাতে এগিয়ে এসেছে, উদ্যোক্তা তৈরি, অর্থায়ন করেছে। ব্যাংক খাত শিল্পায়নে ভূমিকা রাখায় আজকে অনেক বড় বড় গ্রুপের জন্ম হয়েছে।

এসব বড় বড় গ্রুপ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে জানিয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘দেশের ব্যাংক খাত এখন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর প্রসারে কাজ করছে। গুটি কয়েক গোষ্ঠীর কারণে নিয়ম নীতি করা হচ্ছে।’

পুরো ব্যাংক খাত এখন নিয়ম নীতির বাইরে চলে গিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ব্যাংক তার স্বাধীনতার চর্চার জায়গার পুরোটা হারিয়েছে। গত এক দশকের বেশি সময়ে ব্যাংকিং খাতে ২৪টি বড় ধরনের ‘স্ক্যাম’ হয়েছে, যাতে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকার বেশি ঋণের কেলেঙ্কারি হয়েছে।’’

ব্যাংকিং খাতের সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধানে তিন মাসের জন্য জন্য ব্যাংকিং কমিশন গঠন করার সুপারিশ করে সংস্থাটি বলেছে, ব্যাংক খাতে দ্বৈত প্রশাসন কমাতে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করতে হবে। এ বিভাগের জন্য সরকারি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নেই।

সিপিডির সম্মানিয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতের দুষ্টু চক্র ভেঙে ফেলতে হলে ব্যাংক কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।’