খুলনা | বুধবার | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

চিতলমারীতে হাসপাতালে গিয়েও হামলা, ঠেকাতে গিয়ে মা, মেয়ে ও ছেলে আহত

বাগেরহাট ও চিতলমারী প্রতিনিধি |
০৫:১৬ পি.এম | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪


বাগেরহাটের চিতলমারীতে হাসপাতালে গিয়ে প্রান্ত দাস (৩৭) নামের এক যুবকের উপর দ্বিতীয় দফায় হামলা করেছে প্রতিপক্ষরা। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ হামলার ঘটনা ঘটে। প্রথমে হামলাকারীরা জরুরী বিভাগের গেট বন্ধ করে দেয়। পরে ওই যুবক ও তার মা গীতা দাসকে (৬০) মারপিটের পর হাসপাতালের মেঝেতে ফেলে বুকের উপর লাথি-গুতা মারতে থাকে। এ সময় ঠেকাতে গিয়ে প্রান্তর বোন ¯িœদ্ধা দাসও (৪০) গুরুতর আহত হন। বড় বোন স্নিগ্ধা দাসের অভিযোগ প্রান্ত দাসের হত্যা নিশ্চিত করতে প্রভাবশালী ফারুক মুন্সির নেতৃত্বে ২০-২৫ জন যুবক এ হামলা চালিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। রাতেই কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রান্ত দাসসহ তার মা ও বোনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

প্রান্ত দাস চিতলমারী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার মৃত দেবেন্দ্রনাথ দাসের ছেলে ও সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (নাজিরপুর, পিরোজপুর)। তবে ফারুক মুন্সি এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন।  

স্নিগ্ধা দাস সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তার ছোট ভাই তার জন্য ওষুধ কিনতে ঘর থেকে বের হয়। এ সময় পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা ৬-৭ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ভাইয়ে উপর হামলা করে। ভাইয়ের চিৎকারে সে ও তার মা ছুটে গেলে হামলাকারীরা আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর ফেলে তাদের মারপিট করে। গ্রামবাসিরা একত্রিত হয়ে ছুটে এলে হামলাকারীরা পিছু হটে। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পুলিশ চলে গেলে প্রান্ত দাসের মৃত্যু নিশ্চিত করতে প্রভাবশালী ফারুক মুন্সির নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক পুনরায় হাসপাতালে এসে হামলা চালায়।

তবে ফারুক মুন্সি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘প্রান্ত দাস ও তার ভাড়াটিয়া লোকজন ফারুকের স্ত্রীর ক্রয়কৃত জায়গার ঘর ভাংচুর করে। এতে বাধা দিতে গেলে তার আত্মীয় মুক্তা খান (২৪) কে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে এলাকাবাসিরা জানান, ফারুক মুন্সি কোন দল করে না। সুবিধাবাদী লোক। গত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষের দিকে মামলা-হামলা করে সে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসুদেব হাজরা ও উত্তম সাহার পরিবারকে দেশ ছাড়া করেছে।  
চিতলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) স্বপন কুমার রায় জানান, রাতে খবর পেয়ে প্রথমে প্রান্ত দাসদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আবার হাসপাতালে হামলার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পুনরায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আহতরা লিখিত কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) চিকিৎসক মোঃ সুমন তালুকদার বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে জরুরী বিভাগে মুক্তা খান নামে এক রোগীর চিকিৎসা করছিলাম। এ সময় ওই তিন রোগী এলে তাদের পরে হামলা করা হয়। আমি পুলিশে ফোন দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেন। আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে। প্রশাসন চাইলে দেওয়া যাবে।