খুলনা | বুধবার | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

অফিস সহকারী হয়েও সিনিয়র লাইসেন্স অফিসারের দায়িত্বে : কর্তৃপক্ষ নোটিশ করলেও জমা দেয়নি মোটরের টাকা

কেসিসির লাইসেন্স অফিসার ফারুকের বিরুদ্ধে আটক অটোরিকশার মোটর বিক্রির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:১৯ এ.এম | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪


কেসিসির সিনিয়র লাইসেন্স অফিসার ফারুক হোসেন তালুকদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযানে আটক অটোরিকশার মোটর বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পেয়ে কর্তৃপক্ষ বিক্রিত মোটরের টাকা ফেরত দিতে নোটিশ করলেও অদ্যাবধি তিনি তা জমা দেননি। অভিযোগ আছে তৎকালীন মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের ভাইপো হওয়ার সুবাদে তিনি মেয়রের ক্ষমতাবলে বিভিন্ন অপকর্ম ও লাইসেন্স অফিসারের পদ দখল করে রাখেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে গত ২০২৩ সালের শুরুর দিকে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল বন্ধ করা হয়। তারপরও নগরীতে বেশ কিছু জায়গায় এই অটোরিকশা দেখা যায়। ফলে খুলনা সিটি কর্পোরেশন প্রশাসন বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ব্যাটারি চালিত রিকশা জব্দ করে। এক একটি অটোরিকশা ৪টি ব্যাটারী, মোটর ও কন্ট্রোলার দিয়ে বানানো হয়। ফারুক হোসেন তালুকদার কেসিসির সিনিয়র লাইসেন্স অফিসার হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় কেসিসিতে ১ হাজার ৮৫৩টি অটোরিকশার ব্যাটারী আটক করা হয়। সে হিসাবে মোট ৪৬৩টি মোটর জমা থাকার কথা কেসিসির ভান্ডারে। তবে জমা দেওয়া হয়েছে ৪১৫টি। ৪৮টি মোটরের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। 
জানা গেছে কেসিসির সিনিয়র লাইসেন্স কর্মকর্তা ফারুক হোসেন তালুকদার তার নিজস্ব তত্ত্বাবধায়নে রেখেছিলেন অটোরিকশার ব্যাটারী ও মোটর। তবে ভান্ডারে মোটর কম থাকায় শুরু করা হয় তদন্ত। সে সময় তদন্তে উঠে আসে ফারুক হোসেন তালুকদারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। তিনি ভান্ডার থেকে ৪৮টি ব্যবহারযোগ্য মোটর বিক্রি করে দেন। যার মূল্য ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এ বিষয়ে ২০২৩ সালের ২৯ মে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক শাখা থেকে কেসিসির কোষাগারে টাকা পরিশোধের জন্য একটি নোটিশ দেওয়া হয় ফারুক হোসেন তালুকদারকে। ১০ কর্মদিবসের মধ্যে টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও পার হয়ে যাচ্ছে প্রায় দেড় বছর। এখনো টাকা পরিশোধ করেননি তিনি। 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কেসিসির সিনিয়র লাইসেন্স অফিসার পদে দায়িত্ব পালন করা ফারুক হোসেন তালুকদার ছিলেন অফিস সহকারী। তৎকালীন মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের ভাইপো ছিলেন তিনি। সে কারনে মেয়রের ক্ষমতাবলে বিভিন্ন অপকর্ম ও লাইসেন্স অফিসারের পদ দখল করে রাখেন তিনি। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তার মুঠোফোন নম্বর ০১৭১৮৮৪৮০০৩ বন্ধ পাওয়া যায়। 
এদিকে কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলাম বলেন, সিটি কর্পোরেশন থেকে নোটিশ দেওয়ার পরও সে কোষাগারে টাকা পরিশোধ করেনি। তাই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়াও তাকে তার পদ থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।