খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

নগরীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সহযোদ্ধা কদরুল তিনদিন নিখোঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৫০ এ.এম | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪


নগরী থেকে মোঃ কদরুল হাসান নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযোদ্ধা এক কর্মী দুই দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) তিনি নগরীর সোনাডাঙ্গার সোনার বাংলা গলির বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। এ ঘটনায় তার স্ত্রী সাঈদা খাতুন সোনাডাঙ্গা ও খুলনা সদর থানায় দু’টি জিডি করেছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন নিখোঁজ কদরুল হাসানের স্ত্রী সাঈদা খাতুন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার স্বামী কদরুল হাসান নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন ১৮নং ওয়ার্ডের সোনার বাংলা গলির বাসিন্দা। তার স্থায়ী ঠিকানা খুলনার তেরখাদা থানাধীন বিরি আজগড়া। আমরা স্বামী-স্ত্রী নগরীর সোনাডাঙ্গার সোনার বাংলা গলিতে ভাড়া বাসায় বসবাস করি। আমার স্বামী খুলনার খালিশপুরস্থ সরকারি হাজী মোহাম্মদ মুহসীন কলেজের ছাত্র। পাশাপাশি নগরীর শেখপাড়া পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পার্ট টাইম চাকুরি করেন। সা¤প্রতিক ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন অগ্রসেনানী হিসেবেও তার ভূমিকা ছিল অনন্য। বিশেষ করে স¤প্রতি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যার কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গঠিত ত্রাণ সংগ্রহের কাজেও রাত-দিন পরিশ্রম করে নগরীর ময়লাপোতা এলাকায় কাজ করেছেন।
সাঈদা খাতুন আরও বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে আমার স্বামী বাসা থেকে বের হন। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার সঙ্গে আমার মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান যে, আমি বন্যার্তদের ত্রাণের কাজে ব্যস্ত আছি। খুব দ্রুত বাসায় ফিরবো। পরবর্তীতে সে বাসায় ফেরেনি। রাত ১১টার দিকে আমি আমার স্বামীকে ফোন দিলে একবার তার নম্বর খোলা পাই। কিন্তু ফোন রিসিভ করে না। তার পর থেকে নম্বর বন্ধ। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আমার স্বামীর কোনো সন্ধান পাইনি। এরপর থেকে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও কয়েকজন সমন্বয়কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সম্ভাব্য সকল স্থানে তাকে খুঁজেছি। কিন্তু কোনো সন্ধান পাইনি। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রথমে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করি।
এছাড়া রাতে আবার পুলিশের পরামর্শে খুলনা থানায় আরও একটি জিডি করা হয়। কেন না হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাস্থল খুলনা সদর থানা হওয়ায় পুলিশ এমন পরামর্শ দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান মেলেনি। এ অবস্থায় আমরা পরিবারের সকলেই উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, পরিবারের অন্যতম সদস্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযোদ্ধা কদরুল হাসানের সন্ধান পেতে প্রশাসনের তথা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে জিডির তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা থানার এসআই এইচ এম শহীদুল ইসলাম বলেন, কদরুল হাসানের সর্বশেষ অবস্থান নগরীর ময়লাপোতায় পাওয়া গেছে। তবে সেখান থেকে তিনি কোথায় গেছেন, সেটি জানা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তার খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।