খুলনা | রবিবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৮ পৌষ ১৪৩১

তালায় গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা হাবিব

বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ হাসিনা থেকে মুক্তি পেয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
০২:২১ এ.এম | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪


সাতক্ষীরার তালায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক ও সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ হাবিবুল ইসলাম হাবিব কে গণসংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। শনিবার  বিকেলে তালা উপজেলার কুমিরা হাইস্কুল মাঠে উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে এই গণসংবর্ধণার আয়োজন করা হয়। 
তালা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মৃণাল কান্তি রায় এর সভাপতিত্বে গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ হাবিবুল ইসলাম হাবিব। 
প্রধান অতিথি হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, মিথ্যা মামলায় আমাকে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। টানা সাড়ে চার বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছি। “নির্জন কারাগার থেকে আসতে পেরে আমি আল­াহর নিকট শুকরিয়া আদায় করছি। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ হাসিনা থেকে মুক্তি পেয়েছে, এর থেকে আনন্দের আর কি হতে পারে।”
তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের ফলে আজ দেশ পুনরায় স্বাধীন হয়েছে। তাদের বিপ্লবের জন্যেই আজকের এ বিজয়। বীর ঘোষণা করছি তাদেরকে যারা হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে শহিদ হয়েছে। তরুণ ছেলেদের জীবনের বিনিময়ে আজ এ নতুন দেশ। ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান,  ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ,  এরশাদ মুক্ত আন্দোলন, সবশেষ হাসিনা মুক্ত আন্দোলন করেছে এই ছাত্ররা তাদেরকে সম্মান জানাই।’ 
বিডিআর হত্যার বিচার চেয়ে তিনি আরও বলেন, সকল হত্যার বিচার করতে হবে। শেখ হাসিনার নাম বাংলার মাটিতে আর কেউ  মনে রাখবে না। আওয়ামী লীগকে নির্যাতন করা, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া ও ক্ষয়ক্ষতি করা যাবে না। তিনি বলেন, তালার উন্নয়ন হয়েছে খালেদা জিয়ার আমলে এবং আমার নেতৃত্বে। আমার কাজের মূল্য তালা-কলারোয়ার জনগণ দিয়েছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ ও চিরঋণী। এ সময় তারুণ্যের উচ্ছ¡াস তারেক রহমানকে দ্রুত এদেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানান তিনি। 
উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেখ শফিকুল ইসলাম ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মির্জা আতিয়ার রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপি’র রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, খুলনা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, খুলনা মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচীব শফিকুল আলম তুহিন, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম এবং হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পতœী এড. জাহানারা পারভীন বকুল প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ‘হাবিব চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলো শেখ হাসিনাকে সাতক্ষীরায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। ৪ বছর কারাবন্দী ছিলো তবু মাথা নত করেনি সে। অথচ মাফিয়া শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। বিগত ১৭ বছরের বিপ্লবের উপসংহার টেনেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভাইরা। তাদের অগ্রণী ভূমিকায় আজ দেশ নতুন করে স্বাধীন।  ১৭ বছরে যারা অপরাধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’ এ সময় তিনি বলেন, ইউনুসের ব্যর্থতা মানে বাংলাদেশের ব্যর্থতা। তাই তাকে সহযোগিতা করতে হবে। সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচন কমিশনে নিরপেক্ষ লোক আনতে হবে। স্বাধীনতা যেন হারিয়ে না যায় সেদিকে এই সরকার যেন গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফা, ইউপি চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু, অধ্যাপক মোশারাফ হোসেন, রাশেদুজ্জামান রাজু, ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, যুবদলের সদস্য সচীব মোস্তফা মহাসীন মন্টু, তালা থানা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ হাফিজুল ইসলামসহ অনেকেই। এ সময় উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উলে­খ্য, সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় হাবিবুল ইসলাম হাবিব আটক হয়েছিল। উক্ত মামলাসহ একাধিক মামলায় তার বিভিন্ন মেয়াদে ৭০ বছরের সাজা হয়। দীর্ঘ ৪ বছর কারাভোগের পর ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান হাবিবুল ইসলাম হাবিব।