খুলনা | বুধবার | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

দাকোপের ঢাকী নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ভেড়িবাঁধ মেরামত সম্পন্ন, জনমনে স্বস্তি

দাকোপ প্রতিনিধি |
০২:২৫ এ.এম | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪


অবশেষে পাউবো’র নেতৃত্বকাধীন শ্রমিকেরা প্রয়োজনীয় বালু ভর্তি টিউব ও জিও ব্যাগ ফেলে দাকোপের খোনা গ্রামে ঢাকী নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ভেড়িবাঁধটি আটকাতে সক্ষম হওয়ায় স্থানীয় জনমনে স্বস্তি ফিরেছে।  গ্রামের বসতঘর বাড়ির উঠানের ভিতরে ঢুকে পড়া পানি নেমে গেলেও অনেক স্থানে রোপা আমন ফসলের ক্ষেত এখনো তলিয়ে রয়েছে। ভেসে গেছে দুই শতাধিক পুকুরের সাদা মাছ এবং ৪টি মৎস্য ঘেরের বাগদা চিংড়ি। সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
খোনা গ্রামের কৃষক চিত্তরঞ্জন বাইন এ প্রতিনিধিকে জানান, আমরা আর অন্যদের মত বাপ-দাদার পৈতৃক সম্পত্তি বসতঘর বাড়ি, ফসলী জমি, স্থাপনা নদীগর্ভে হারিয়ে সর্বশান্ত হতে চাই না। আমরা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান চাই না, আমরা অসহায় কৃষক, আমাদের এক ফসলী জমির উপর আমন ধান বপন করে পরিবার পরিজনদেরকে নিচে বাঁচতে চাই। তাই আমরা উপজেলার পাউবো’র ৩১নং পোল্ডারের উপকূলীয় বাসীদের জানমাল রক্ষার্থে নদী শাসন পূর্বক যুগোপযোগী টেকসই বাঁধ নির্মাণ চাই। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন শুধু একা চিত্তরঞ্জন বাইনের নয়, তার মতো করে এ নদী ভাঙনের শিকারে নানা ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনাসহ টেকসই বাঁধের দাবি জানিয়েছেন কৃষক আব্দুল­াহ ফকির, নজরুল ফকির, সত্যরঞ্জন বিশ^াস, রাসেল মোল­া, খোকন মোল­া, পরিতোষ মন্ডলসহ অনেকে।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে গত ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার পানখালী ইউনিয়নের খোনা গ্রামে মোল­া বাড়ির দক্ষিণ পাশে ঢাকী নদীগর্ভে বিলীন হয় পাউবো’র ৫০ মিটার ভেড়িবাঁধ। বাঁধ ভাঙার পর লোকালয় ঢুকে পড়া নদীর অথৈ পানি বিকেলের ভাটায় নেমে গেলে পাউবো’র নেতৃত্বে শ্রমিকরা রাতভর বাঁধটি তাৎক্ষণিক আটকাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। অবশেষে বাঁধ ভাঙার প্রায় ৩২ ঘন্টা পর গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় পাউবো কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় মালামালসহ শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করে বাঁধটি আটকাতে সক্ষম হন।   
পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহম্মেদ জানান, আল­াহর রহমতে বাঁধ ভাঙার ৩২ ঘন্টা পর বিরতিহীন কাজ করে শনিবার সন্ধ্যায় অবশেষে ভেঙে যাওয়া বাঁধটি আটকাতে সক্ষম হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ আব্দুল কাদের বলেন, নদীগর্ভে বিলীন হওয়া বাঁধটি সরজমিনে পরিদর্শন পূর্বক ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি। তিনি বলেন খোনা গ্রামের বাঁধ ভেঙে ৩টি গ্রামের ১৯৭টি পরিবার সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট সহায়তা চাওয়া হয়েছে। সহায়তা আসলেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হবে।  এ সময় এলাকা পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোকে সান্ত্বনা দিয়েছেন থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।  
পাউবো’র উপ-বিভাগী প্রকৌশলী সুজয় কর্মকার বলেন, নদীগর্ভে বিলীন হওয়া খোনা গ্রামের বাঁধটি ঘটনার দিনই আটকানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু ভেঙে যাওয়া বাঁধের পাশে গভীরতার কারণে ওইদিন বাঁধটি আটকানো সম্ভব হয়নি। তবে আজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেতৃত্বাধীন প্রয়োজনীয় শ্রমিকরা বালু ভর্তি ২৩ ফুট লম্বা ১২টিউব ব্যাগ এবং বালু ভর্তি ৫ হাজার জিও ও ছিনথেটিক ব্যাগ ফেলে বাঁধটি আটকাতে সক্ষম হয়েছেন।