খুলনা | সোমবার | ১১ নভেম্বর ২০২৪ | ২৬ কার্তিক ১৪৩১

উত্তরাঞ্চলে উন্নতি, পূর্বাঞ্চলে আবারও বন্যার শঙ্কা

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৭ এ.এম | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪


ভারী বৃষ্টিতে হালদা, সাঙ্গুসহ চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি বাড়ছে। এতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল­া, নোয়াখালী, ল²ীপুর জেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। একই কারণে ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের নদীগুলোর পানি বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে। তবে উত্তরাঞ্চলে বন্যাপরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
ন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী ও মাতামুহুরী নদীগুলোর পানি কমছে। গোমতী নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। অপরদিকে হালদা ও সাঙ্গু নদীর পানি বাড়ছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশে এবং উজানে ভারী বৃষ্টির প্রবণতায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল­া, নোয়াখালী, ল²ীপুর জেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের নদীগুলোর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, যশোর ও আশেপাশের এলাকায় একটি গভীর স্থল নিম্নচাপ অবস্থান করছে। আগামী দুই দিন উপকূলীয় ও দেশের মধ্যাঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এ কারণে এই সময় ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।
অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল আছে, অপরদিকে যমুনা নদীর পানি কমছে। আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি ধীর গতিতে কমতে পারে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গঙ্গা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, অপর দিকে পদ্মা নদীর পানি কমছে। আগামী তিন দিন পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মার পানি স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তী দুই দিন পানি কমতে পারে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী তিন দিন পর্যন্ত এসব নদীর পানি ধীর গতিতে কমতে পারে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি কমছে। পানি কমছে মনু, সারিগোয়াইন, ধলাইয়ের এবং খোয়াই নদীর পানি স্থিতিশীল আছে। আগামী তিন দিন এসব নদীর পানি কমতে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের ভারী বর্ষণের সতর্কবাণীতে বলা হয়, স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে।
উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি : উত্তরাঞ্চলসহ দেশের মধ্য ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বন্যাপরিস্থিতি উন্নতির দিকে। আগামী ১০ দিন সব অঞ্চলের নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করছে বন্যা পূর্বাভাস এবং সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সাধারণত দেশে বরাবরই ভাদ্রের শেষ ভাগে বন্যার পানি কমতে থাকে। আশ্বিন মাসে যা একেবারে কমে যায়। কার্তিকে দেশের কোথাও আর বন্যা পরিস্থিতি থাকে না। আজ ৩০ ভাদ্র অর্থাৎ আশ্বিনের শুরুতে রয়েছে দেশ।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, উত্তরের নদীর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল। আগামী সাত দিন পানি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকতে পারে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা, মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর অববাহিকায় বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই।
মধ্য থেকে দক্ষিণ পশ্চিমের জেলাগুলোতে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল। আগামী চার-পাঁচ দিন স্থিতিশীল ভাবে হ্রাস পেতে পারে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে রাজশাহী, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, শরীয়তপুর ও ফরিদপুর জেলায় গঙ্গা-পদ্মা নদীর অববাহিকায় পানি বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই।
এছাড়া একেবারে মধ্যাঞ্চলে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর পানি সমতল। আগামী সাত দিন তা স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর অববাহিকায় পানি বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে জেলার অন্তত ২০০টি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে জনজীবনে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। এসব এলাকায় বন্যা না হলেও বৃষ্টির পানিতে বন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েকশ’ মানুষ।
গত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানের লামায় ১৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। যদিও একই দিন বান্দরবান শহরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ৪১ মিলি মিটার, যা দেশের সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। আশার খবর হলো, বন্যাপ্রবণ উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে ৫৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।