খুলনা | শুক্রবার | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম একনেক সভা ১২২২ কোটি টাকার ৪ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকল্পের সবকিছু ওপেন থাকবে, সবাই জানবে : প্রধান উপদেষ্টা

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪০ এ.এম | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪


অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেওয়া প্রকল্প পুনর্বিবেচনা করা হবে। এখন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বেশি নজর দিতে হবে। তিনি বলেছেন, প্রকল্পের সবকিছু ওপেন থাকবে। শুধু পিডি জানবে তা নয়, সবাই জানবে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বুধবার প্রথম অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে প্রকল্পের সব তথ্য ওপেন থাকবে। মেগা প্রকল্প না নিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ ছোট প্রকল্প নেওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা একমত হয়েছেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেওয়া প্রকল্পে চিন্তা দরকার। মেগা প্রকল্পও বাদ দিতে হবে। নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে। প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রকল্পের সবকিছু ওপেন থাকবে। শুধু পিডি জানবে তা নয়, সবাই জানবে। সামনে বড় প্রকল্প নয়, জনগুরুত্বপূর্ণ ছোট প্রকল্প নেওয়া হবে।
১২২২ কোটি টাকার ৪ প্রকল্প অনুমোদন :  গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রথমবারের মতো জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা (একনেক) করেছে। সেখানে চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২২২ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিকেরে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে দুইটি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের। এর মধ্যে ‘বাখরাবাদ- মেঘনাঘাট-হরিপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পে ৭০.৬৩ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ‘২টি মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ (সুন্দলপুর-৪ ও শ্রীকাইল-৫) এবং ২টি অনুসন্ধান কূপ (সুন্দলপুর সাউথ-১ ও জামালপুর-১) খনন প্রকল্প’ এ ৫৮৮.৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প (২য় পর্যায়)’ এর জন্য ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৯৯.৮৪ কোটি টাকা জিওবি এবং ১০০.১৬ কোটি টাকা ইউনিসেফের অনুদান।
এছাড়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘তথ্য আপা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পটির মেয়াদ ১ বছর বৃদ্ধি এবং প্রকল্পের নাম পরিবর্তনের পাশাপাশি ব্যয় পুনঃপ্রাক্কলন করার নির্দেশনা দিয়ে অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পটিতে দুই বছরের জন্য ১৬৩.১১ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ব্যয়ও কমানো হবে।
সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিগত সময়ে একনেক সভায় বিপুল সংখ্যক প্রকল্প নেয়া হয়েছে। কিন্তু সবক্ষেত্রে বাস্তবায়নের গতি এক থাকতো না। অপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক প্রকল্পও থাকতো। এখন সেসব যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। কাজেই আগের মতো একনেক সভা মানেই যেখানে অর্থ ব্যয়ের কর্মযজ্ঞ ছিল, এখন সে পরিধি কমে আসবে।
তিনি জানিয়েছেন, বিদেশি অর্থায়ন পাওয়া যাবে এমন প্রকল্প গ্রহণে গুরুত্ব দেবে সরকার। বহু বছর আগের অনেক প্রকল্প পড়ে আছে। এগুলোতে বিদেশি সহযোগীদের নজরদারি বেশি থাকে। অনিয়ম করা যায় না। তাই ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ কম থাকে। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও অগ্রাধিকারের সাথে মিলে এমন কিছু নতুন প্রকল্প হাতে নেয়া হবে।