খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

প্রতিটি হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে

|
১২:১৮ এ.এম | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪


দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। সামাজিক সহিংসতার পাশাপাশি খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। একইভাবে বাড়ছে নৃশংস কায়দায় হত্যার ঘটনাও। এমন বেশ কিছু খবর এরই মধ্যে দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের প্রথম ২৭ দিনে এক সেনা কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি খুন হয়েছেন। শুধু ২৭ সেপ্টেম্বরই দেশের বিভিন্ন স্থানে এক স্কুল শিক্ষার্থীসহ চারজনকে খুন করা হয়েছে। স্বৈরাচার উৎখাত আন্দোলনের সময় থানাগুলো থেকে লুট হওয়া অনেক আগ্নেয়াস্ত্র এখনো উদ্ধার করা যায়নি। পুলিশের অনেক যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। যানবাহান ও রসদের ঘাটতি রয়েছে। অনেক রেকর্ড পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে পুলিশ এখনো সারা দেশে স্বাভাবিকভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারছে না। এই সুযোগে সন্ত্রাসী ও চোর-ডাকাতের তৎপরতা অনেক বেড়ে গেছে।
দেশজুড়ে বাড়ছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার। সেই সঙ্গে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অভাব তীব্র হচ্ছে। মানুষ যেন অবলীলায় অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠতে পারছে। স¤প্রতি এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যাকে কোনোক্রমেই প্রচলিত ধারার অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত যুবক তোফাজ্জলকে যেভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা সারা দেশের বিবেকবান প্রত্যেককে কষ্ট দিয়েছে।
চট্টগ্রামে নির্জন রাস্তায় বেশ কয়েকজন মিলে গান গাইতে গাইতে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করে এবং হত্যাকান্ডের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের রাস্তা থেকে ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতাকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এক সাবেক ও পঙ্গু ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে গণপিটুনি দিয়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যার পর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে ব্যাপক সংঘাত হয় এবং চারজন নিহত হয়। চট্টগ্রামের চকরিয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় ডাকাতদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম নিহত হন। এ ছাড়া চাঁদাবাজি ও এলাকার আধিপত্য নিয়ে ঘটছে খুনাখুনি। জমিজমার বিরোধসহ তুচ্ছ পারিবারিক বিরোধ থেকেও ঘটছে হত্যাকান্ড। অনেক বেওয়ারিশ লাশও পাওয়া যাচ্ছে। এসব হত্যাকান্ড সম্পর্কে সঠিক তথ্যের অভাব রয়েছে। হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি নামের একটি সংগঠনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে গত ৪ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৫৪৮ জন নানাভাবে নিহত হয়েছে।
আমরা মনে করি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। প্রতিটি হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।