খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

পাচারের অর্থ ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডাসহ ১২ দেশে ৭১ চিঠি, জবাব ২৭টিতে

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৬ এ.এম | ০২ অক্টোবর ২০২৪


বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে ১২ দেশে মোট ৭১টি চিঠি (এমএলএআর) পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ২৭টির জবাব পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে দুদকের মহাপরিচালক মোঃ আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, পাচারকৃত অর্থের বেশির ভাগ স্থানান্তর করা হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায়।
সংস্থাটির মহাপরিচালক বলেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে এখন পর্যন্ত ১২ দেশে ৭১টি মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানো হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য এখন পর্যন্ত ২৭টি এমএলএআরের বিষয়ে জবাব পেয়েছি।  
বিগত সরকারের আমলে অন্তত ১৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। দুদক বলছে এর মধ্যে কানাডা, আমেরিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বেশি টাকা পাচার হয়েছে।
এর আগে বেলা ১১টা থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশের কো-অপারেশন বিভাগের প্রধান মিশেল ক্রেজা, প্রোগ্রাম ম্যানেজার পাবলো প্যাডিন পেরেজ, নাদের তানজা এবং কিশওয়ার আমিনের সমন্বয়ে একটি টিম দুদকে বৈঠক করেন। এসময় দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল­¬াহ ও সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন, দুদক মহাপরিচালক মোঃ আক্তার হোসেন, পরিচালক আবদুল­াহ আল জাহিদ ও গোলাম শাহরিয়ারের সমন্বয়ে একটি টিম সংস্থাটির পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে দুদককে মানি লন্ডারিংসহ সামগ্রিক বিষয়ে সহযোগিতার প্রতিশ্র“তি দেয় দলটি।  
সূত্র জানায়, সভায় দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করা হয়। এছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল তাদের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রতিশ্র“তি ব্যক্ত করেছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এফবিআইসহ বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা পেতে দফায় দফায় বৈঠক করছে দুদক।
দুদকের মহাপরিচালক মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সে বিষয়টি আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সামনে উপস্থাপন করেছি। যেসব দেশে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে সে অর্থ ফিরিয়ে আনতে তারা যাতে সহযোগিতা করে সে বিষয়টি আমরা তাদের বলেছি। বৈঠকে আমরা তাদের যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়েছে সেই দেশগুলোর নাম উলে­¬খ করেছি, আশা করছি ওইসব দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে।
বৈঠকে দুদক কীভাবে পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে সহায়তা পেতে পারে, সেই সঙ্গে কমিশনের সক্ষমতা জোরদার করার জন্য সম্ভাব্য কারিগরি সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয় বলে দুদক উপ-পরিচালক আখতারুল ইসলাম জানান।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই), ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস ফর ড্রাগস এ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি), বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ধারাবাহিক ভাবে দুদকের সঙ্গে পাচারকৃত অর্থ ফেরতসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সভা করেছে।