খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

বিশ্ব শিক্ষক দিবসের প্রত্যাশা: বাংলাদেশের প্রেক্ষিত

|
১২:২৪ এ.এম | ০৮ অক্টোবর ২০২৪


১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবরকে ইউনেস্কোর অধিবেশনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস ঘোষণা করা হয়। পৃথিবীর প্রয় শতাধিক রাষ্ট্র এ দিনটিকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। ১৯৯৪ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব শিক্ষা দিবস পালন করে আসছে। এ দিবসের লক্ষ্য হলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আদর্শ আলোকিত মানুষরূপে গড়ে তোলার বিষয়টি নিশ্চিত করা। বলা বাহুল্য শিক্ষকরাই পারে নৈতিক চরিত্রের অধিকারী আলোকিত মানুষ তৈরি করতে।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন কেবল আনুষ্ঠানিকতা না করে আমাদের স্মরণ করতে হবে ১৯৬৬ সালের ইউনেস্কো ও আইএলওর মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষরের বিষয়টি। এ সমঝোতা স্বাক্ষরের কথা হলো : শিক্ষকের মর্যাদার উপর গুরুত্ব আরোপ, প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে শিক্ষকদের স্বচ্ছলতাও উন্নত জীবন যাপনের নিশ্চয়তা। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এ সমঝোতা স্বাক্ষরের বাস্তবতা কতখানি পূরণ হয়েছে তা আলোচনায় আনলে হতাশ হওয়া ছাড়া উপায় নেই।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষকতা পেশা তার মর্যাদা হারাচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে শিক্ষার মান অনেক উচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে। মান সম্মত শিক্ষার অভাবে আমাদের দেশের শিক্ষা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এক পরিসংখ্যানে প্রকাশ শিক্ষার বিশ্ব মানে পৃথিবীর ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কোরে এক সমযের প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্পর্শ করতে পারেনি।
এ বছরের বিশ্ব শিক্ষক দিবসের শ্লোগান, ‘শিক্ষকের কণ্ঠস্বর মূল্যবান; শিক্ষার জন্য একটি নতুন সামাজিক চুক্তি’ শিক্ষকরা জাতি গঠনের কারিগর, তাদের হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে আনা, পেশাগত সমস্যার সমাধান এবং জীবন যাত্রার মানের দ্রুত সমাধান করতে না পারলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মূল্য দিতে হবে।
প্রসংগত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মেধাবী, সন্দেহ নেই। তা স্বত্বেও বৈষয়িক সুযোগ সুবিধা অপ্রতুল। এক্ষেত্রে প্রয়োজন :- (১) গবেষণা সম্মানি, চিকিৎসা ভাতা, আবাসন ব্যবস্থার বৃদ্ধি, শিক্ষকদের যাতায়াত নিশ্চিত করনে পরিবহনের ব্যবস্থা। শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও মেধা বিকাশে উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য সরকারের সুযোগ সুষ্টি করা। বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, নিয়মিত জার্নাল প্রকাশের যথাযথ অর্থ বরাদ্দ ও বেতন ভাতা বাড়ানো। বেসরকারি কলেজে অধ্যাপক ও সহযোগি অধ্যাপক পদ সৃষ্টি করা দরকার। বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের চিকিৎসা ভাতা ও বাসা ভাড়া সরকার কলেজের সমপর্যাযের হতে বাঁধা কোকায়? এ বৈষম্য বিরোধী চেতনার পরিপন্থি।
৫৩ বছরে আমরা একটা টেকসই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে পারিনি। দেশে বহুধা বিভক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা ভিন্ন ভিন্ন বলয় তৈরি করছে। সরকার সংস্কারে হাত দিয়েছে। বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম ও পাঠ্য পুস্তক প্রণয়ন ও সংস্কারের আওতায় না আনলে ভেঙে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে জোড়া লাগাবে কে? মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা পদ্ধতির মেরুদন্ড ভেঙে গেছে। একে ঠিক জায়গায় আনতে না পারলে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ফলাফল কি বহন করবে তা নিশ্চিত নয়।