খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

খুলনায় দারোয়ান থেকে কোটিপতি রমজান (পর্ব-৩)

রূপসায় বাজার দখল ও চাঁদাবাজির রমরমা ব্যবসা রমজান-খেলাফতের

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:২৩ এ.এম | ১০ অক্টোবর ২০২৪


খুলনার রূপসা এলাকার ত্রাস নামে খ্যাত রমজান আলী হাওলাদার ও তার ভাই খেলাফতের চাঁদাবাজির প্রধান হাতিয়ার রূপসা মাছ বাজার ও ঘাট। গত কয়েক বছর ধরে রূপসার মাছের বাজার থেকে শুরু করে কাঁচাবাজার দখলে রেখেছে রমজান, খেলাফত ও তাদের সহযোগীরা। দারোয়ান ও কুলির কাজ করার পরে রমজান আলী ১৯৯৯ সালে রূপসার সন্ধ্যা বাজারে ফুটপাত দখল করে মাছ বিক্রি করতো। পরবর্তী বছরেই রূপসা পাইকারি কাঁচাবাজারের জায়গা দখল করে একটি মাছের আড়ৎ তৈরি করে। সেখান থেকেই শুরু হয় বাজারে চাঁদাবাজি। রূপসা মাছ ঘাটে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করে তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা। মাছ ঘাট থেকে জোরপূর্বক টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয় এই বাহিনীর সদস্য হাবিব ও ইব্রাহীম। এই আয়ের সিংহভাগ টাকা যায় রমজান আলীর পকেটে। 
রমজান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে রয়েছে শ্রমিকদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। শ্রমিকদের ন্যায্য টাকা না দিয়ে সেখান থেকে বছরে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সে। রূপসা মাছ বাজারে ১৬-১৮ বছর আড়ৎদার সমিতির নির্বাচন না দিয়ে একক ভাবে দখলবাজি করে আসছে রমজান। সেখান থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। 
এদিকে ২০১২ সাল থেকে খুলনা শহরে পাইকারি মৎস ব্যবসায়ীদের সমবায় সমিতি দখল করে রেখেছে রমজান আলী। সেখান থেকে বিভিন্ন ভাবে চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 
রমজান আলীর দখলে রয়েছে পশ্চিম রূপসা কাঁচাবাজার দখলের অভিযোগ। শ্রমিক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সবার কাছ থেকেই চাঁদাবাজি করে সে। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় এই কাঁচাবাজারের শ্রমিকদের সরদার মোঃ খলিলকে বেধড়ক পিটিয়ে শহর ছাড়া করে এই রমজান ও তার সহযোগীরা। তার কাছে ৫ রাখ টাকা চাঁদা দাবি করে খেলাফত। 
রূপসার সন্ধ্যা বাজার কমিটিও দখল করে আছে রমজানের ভাই খেলাফত। গত কয়েক বছরে সেখান থেকে অবৈধ ভাবে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। এ বাজারের কমিটি হাতিয়ে নেওয়ার পর থেকেই শুর হয় তার দখলদারি ও চাঁদাবাজির রমরমা ব্যবসা। কাঁচাবাজার ও মাছ বাজারের বেশ কিছু দোকানদারকে মেরে দখল করে নেয় দোকান। এক একটি দোকান বিক্রি করে ৫ লাখ টাকায়। এছাড়াও অনেক ব্যবসায়ীকে চাঁদার জন্য হুমকি দেয় খেলাফত। আওয়ামী রাজনীতি ও স্থানীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় এ ভাবেই রমজান-খেলাফত বনেছেন কোটিপতি। 
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, গত কয়েক বছরে রূপসার বেশির ভাগ বাজার থেকে শুধুমাত্র চাঁদাবাজি করে কোটি কেটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। তাদের কারনে সুস্থ ভাবে ব্যবসা করা সম্ভব হয়নি। তাই তাদের গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।