খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

৩ সপ্তাহ অভিভাবকহীন খুলনা জেলা বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:১২ এ.এম | ১১ অক্টোবর ২০২৪


গেল তিন সপ্তাহ অভিভাবকহীন খুলনা জেলা বিএনপিসহ এর ছয়টি অঙ্গ সংগঠন। ভেঙে দেয়ার তিন সপ্তাহ পার হলেও গঠন করা হয়নি নতুন কমিটি। ফলে সাতটি সংগঠনের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গেল ১৯ সেপ্টেম্বর খুলনা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্র। নতুন কমিটি না হওয়ায় নেতাকর্মীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। পাশাপাশি পদপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রে লবিং করছেন।
দলীয় সূত্রমতে, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি হয়। এতে আমীর এজাজ খানকে আহবায়ক শেখ আবু হোসেন বাবুকে যুগ্ম-আহবায়ক এবং এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী হন সদস্য সচিব। ২০২২ সালের ৫ মার্চ ৬৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন পায়, যাতে যুগ্ম-আহŸায়ক ১৪ ও সদস্য ৪৮ জন।
জেলা বিএনপি পাইকগাছা ও চালনা পৌরসভায় এবং দাকোপ, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার সব ইউনিয়নে সম্মেলন করেছিল। এ ছাড়া ৯ উপজেলা ও দু’টি পৌরসভায় আহŸায়ক কমিটি করেছিল। এরপর উপজেলাগুলোতে সম্মেলন করার কথা থাকলেও জেলা কমিটি সে সুযোগ পায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, স্থায়ী কমিটির এক সদস্য’র ভাগনে জামাই রফিকুল ইসলাম কাদের ছিলেন খুলনা জেলা কারাগারের জেল সুপার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি রফিকুল ইসলামের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। বিষয়টি স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য শীর্ষস্থানীয় নেতাদের জানালে তারা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
তবে মনিরুল হাসান বাপ্পী জানান, তিনি জেল সুপারের কাছে কখনও চাঁদা চাননি। বরং ২২ আগস্ট আদালতে যে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন, তাতে আসামি করেছেন রফিকুলকে। বাপ্পীর দাবি, নাশকতা মামলায় কারাগারে থাকাকালে ২০২৩ সালের ৩ মে অসুস্থ হন। জেলের চিকিৎসক ইসিজি করে হার্ট এ্যাটাক জানান। এরপর জেল সুপারকে বাইরে কোনো হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানালে নাকচ করেন। ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ায় মামলা করেন। এরপর থেকে রফিকুল বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। তবে এ কারণে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে কিনা, তা জানা নেই বাপ্পীর।
জেলা বিএনপি’র সাবেক আহবায়ক আমীর এজাজ খান জানান, অভিভাবকহীন থাকার বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবগত আছেন। উপযুক্ত সময়ে তিনি কমিটি দেবেন।
দলীয় সূত্র জানায়, ১০ আগস্ট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ১৭ আগস্ট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। ১৯ আগস্ট জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
এদিকে জেলা বিএনপি ও অন্য ছয় ইউনিটের মূল পদ পেতে নেতৃত্ব প্রত্যাশীরা দৌড়ঝাঁপ করছেন। তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করে বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে নিজের ভূমিকা তুলে ধরছেন।