খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

রান পাহাড়ে চাপা পড়ে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
১১:২১ পি.এম | ১২ অক্টোবর ২০২৪


মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিদায়ী টি-টোয়েন্টিতে কী নির্মম ব্যাটিংই না করলেন ওপেনার সঞ্জু স্যামসন ও অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব! দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে ৭০ বলে করলেন ১৭৩ রানের জুটি। ভারতও পায় ৬ উইকেটে ২৯৭ রানের রেকর্ড গড়া স্কোর। টি-টোয়েন্টিতে এটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো দলের সর্বোচ্চ। আর এ সংস্করণে ভারতের সর্বোচ্চও স্কোর। ২৯৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বাংলাদেশ হেরেছে ১৩৩ রানে। ৭ উইকেটে করতে পেরেছে ১৬৪ রান। সেই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা।

ভারতীয় ব্যাটাররা যেভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে, কৌতুহল জাগিয়েছিল তারা টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ইনিংসে নেপালের রেকর্ড ভাঙতে পারে কিনা। তবে ইনিংসের শেষ বলে রিংকু সিং (৮*) ছয় মারলেও তিন শ’ হয়নি ভারতের। অবশ্য আইসিসির পূর্ণ সদস্য দলের পক্ষে এটিই সর্বোচ্চ স্কোর। গত বছর হ্যাংঝুতে এশিয়ান গেমসে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩১৪ রান করেছিল নেপাল। পাওয়ারপ্লেতে ভারতের স্কোর ছিল—১/৮২। রান রেট—১৩.৬৬। সেটি ইনিংস শেষে দাঁড়ায়—১৪.৮৫!

এত বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটাও হয় বোলিংয়ের মতো যাচ্ছেতাই। ইনিংসের প্রথম বলে ফাস্ট বোলার মায়াঙ্ক যাদবের বলে গোল্ডেন ডাক নিয়ে ফেরেন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। এরপর আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের (১৫) সঙ্গে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (১৪) করেন ৩৫ রানের জুটি। সেই জুটি ভাঙেন ওয়াশিংটন সুন্দর। এমন চাপের মুখে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে চমৎকার ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখান লিটন দাস। নিতিশ কুমার রেড্ডির ওভারটিতে ৫ চারে নেন ২০ ওভার। তার মধ্যে শেষ চারটি বাউন্ডারি।

লিটন লড়াইয়ের আভাস দিলেও রিভার্স সুই করতে গিয়ে ফেরেন শান্ত। এরপর তাওহীদ হৃদয়কে (৪২) নিয়ে ৩৮ বলে ৫৩ রানের জুটি লিটনের। বাংলাদেশ উইকেটরক্ষক ২৫ বলে ৪২ রান করে। তবে ফিফটি পেয়েছেন তাওহীদ। তাঁর ৪২ বলে ৫ চার ও ৩ চারে অপরাজিত ৬৩ রানের ইনিংসটি শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। বিদায়ী টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ করেছেন ৯ বলে ১ চারে ৮ রান। 

এর আগে হায়দরাবাদে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দেন স্যামসন। তাসকিন আহমেদের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে টানা চারটি চার মেরেছেন তিনি। এরপর রিশাদ হোসেনের করা ইনিংসের ১০ম ওভারে টানা পাঁচ ছয় মেরেছেন। স্যামসন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৪০ বলে। এই সংস্করণে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই কোনো ভারতীয় ব্যাটারের প্রথম সেঞ্চুরি। এ নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের সেঞ্চুরির সংখ্যা দাঁড়াল—৬।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রোহিত শর্মার (৩৮) পর ভারতের হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন স্যামসন। রোহিতের এই রেকর্ড ভাঙতে না পারলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটি এখন তাঁর। ২২ বলে ফিফটি পেয়েছেন স্যামসন। আগের রেকর্ডটি ছিল রোহিতের, ২০১৯ সালে রাজকোটে ২৩ বলে ফিফটি করেছিলেন তিনি। আজ ২৩ বলে ফিফটি করে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছেন সূর্যকুমারও। ১৫তম ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২৫০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন ভারত অধিনায়ক। ৩৫ বলে ৮ চার ও ৫ ছয়ে ৭৫ রান করে মাহমুদউল্লার বলে ফেরেন সূর্য। তার আগে ৪৭ বলে ১১ চার ও ৮ ছয়ে ১১১ রান মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ফেরেন স্যামসন। ওপেনার অভিষেক শর্মা (৪) ফেরার পর দুজনে জুটি বেধেছিলেন।

সঞ্জু-সূর্য বিদায় নিলেও রানের গতি থামেনি ভারতের। এরপর ২৬ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন রিয়ান পরাগ (৩৪) ও হার্দিক পান্ডিয়া (৩৭)। ভারতকে শেষ পর্যন্ত তিন শ’ পেরোনো স্কোর নিতে দেননি তানজিম হাসান সাকিব। পরপর দুই বলে পান্ডিয়া ও নিতিশ রেড্ডিকে (০) ফেরান বাংলাদেশি পেসার।