খুলনা | শনিবার | ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ইংরেজিতে বেশি ফেল করায় ৪ শিক্ষা বোর্ডে ‘খারাপ’ ফল

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৭ এ.এম | ১৬ অক্টোবর ২০২৪


এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১১ শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এ বছর পাসের হারসহ ফলাফলে বেশি পিছিয়ে পড়েছে ময়মনসিংহ ও যশোর শিক্ষা বোর্ড। চট্টগ্রাম ও কুমিল­া শিক্ষা বোর্ডেও খারাপ ফলাফল হয়েছে। চার শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল খারাপ হওয়ার মূল কারণ ইংরেজি ও তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে ফেল।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডে ৬ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেগুলো হলো- বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি, পদার্থবিজ্ঞান, যুক্তিবিদ্যা ও হিসাববিজ্ঞান। অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোর মধ্যে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে শুধু ইংরেজিতে পাসের হার ৭৭ দশমিক ১১ শতাংশ। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ জনে প্রায় ২৩ জনই ইংরেজিতে ফেল করেছেন।
তাছাড়া বোর্ডটিতে আইসিটিতেও ফেলের হার বেশি। আইসিটি বিষয়ে পাস করেছেন ৭৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। ফেল করেছেন ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী। তাছাড়া হিসাববিজ্ঞানেও পাসের হার কম ময়মনসিংহ বোর্ডে। মাত্র ৭১ দশমিক ৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থী হিসাববিজ্ঞানে পাস করতে পেরেছেন। বাকি ২৮ দশমিক ৬১ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছেন।
অনুষ্ঠিত বাকি চারটি বিষয়ে ময়মনসিংহ বোর্ডে পাসের হার ভালো। বোর্ডটিতে বাংলায় ৯৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞানে ৯০ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যুক্তিবিদ্যায় ৯৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
ময়মনসিংহ বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ আবু তাহের বলেন, আমাদের পরীক্ষার্থীরা তিনটি বিষয়ে খারাপ করেছেন বলে ফলাফলে দেখতে পাচ্ছি। সেগুলো হলো- ইংরেজি, আইসিটি ও হিসাববিজ্ঞান। বিষয়গুলোতে খারাপ করার কারণ কী, তা খতিয়ে দেখা হবে।
যশোর বোর্ডে শুধু ইংরেজি বিষয়ে ফেল করেছেন ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী। ইংরেজি পরীক্ষায় প্রতি ১০০ জনে মাত্র ৬৮ জন পাস করতে পেরেছেন। তবে বাকি ৫ বিষয়ে ভালো ফল করেছেন যশোর বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা।
এ বোর্ডে বাংলায় পাস করেছেন ৯৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আইসিটিতে ৮৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞানে ৮৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যুক্তিবিদ্যায় ৯৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ ও হিসাববিজ্ঞানে ৮৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
ইংরেজিতে বেশি ফেলের কারণ অনুসন্ধান করা হবে বলে জানিয়েছেন যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার। তিনি বলেন, ইংরেজিতে ফেল কমানো গেলে ফলাফল অনেক ভালো হতো। পাসের হারও হয়তো বাড়তো। কেন এটা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখবো আমরা।
চট্টগ্রাম ও কুমিল­া শিক্ষা বোর্ডেও ইংরেজিতে ফল বিপর্যয় হয়েছে। চট্টগ্রামে ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার মাত্র ৬৯ শতাংশ। প্রতি ১০০ জনে ইংরেজিতে ফেল করেছেন ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী। যার প্রভাব পড়েছে বোর্ডের গড় পাসের হারেও। এ বোর্ডে পাস করেছেন ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ শিক্ষার্থী।
কুমিল­া বোর্ডেও ইংরেজিতে বেশি ফেল করেছেন শিক্ষার্থীরা। বোর্ডটিতে ইংরেজিতে ফেলের হার ২০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। বাকি ৫ বিষয়ে তুলনামূলক ভালো ফল করলেও ইংরেজির কারণে গড় পাসের হারে পিছিয়ে গেছে কুমিল­া।
বাকি বিষয়গুলোর মধ্যে কুমিল­ায় বাংলায় পাসের হার ৯২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, আইসিটিতে ৮৮ দশমিক ৬৪, পদার্থবিদ্যায় ৯৬ দশমিক ২৮, যুক্তিবিদ্যায় ৮৭ দশমিক ৮৩ ও হিসাববিজ্ঞানে ৮৭ দশমিক ৮১ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, আমাদের যে পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলোতে বেশ ভালো করেছেন শিক্ষার্থী। শুধু ইংরেজিতে খারাপ হয়েছে। এখানে আমরা পিছিয়ে গেছি।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, কয়েকটি বোর্ডে ইংরেজি, আইসিটিতে খারাপ ফল করেছেন পরীক্ষার্থীরা। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে গড় পাসের হারে। ঢাকা বোর্ড তুলনামূলক স্বাভাবিক ফল হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় ফলাফল স্থিতিশীল বলা যায়।