খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

রিজার্ভে হাত না দিয়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধ : ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি

|
১২:১০ এ.এম | ০৪ নভেম্বর ২০২৪


বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াছে। দায়িত্ব নেয়ার পর এ সরকার অর্থ পাচারের সম্ভব্য সকল পথ বন্ধ করে দিয়েছে। বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানকে কঠোর নজরদারিতে আনা হয়েছে। তাদের ব্যাংক হিসাব তলব ও ফ্রিজ করা হছে। বাস্তবিক পক্ষে দুর্নীতিগ্রস্তদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার উদ্যোগ চলমান থাকায়  দেশ থেকে অর্থপচারের সব পথ বন্ধ করা গেছে। অন্য দিকে  দেশ প্রেমিক প্রবাসীরা আগের চেয়ে বেশী করে রেমিট্যান্স পাঠানো শুরু করায় বিগত সরকারের পতনের পর রেমিটান্স প্রবাহে উল­ম্ফন  দেখা গেছে। সরকার পতনের পর প্রথম মাস সেপ্টেম্বরে গত বছর থেকে ৮০.২০ শতাংশ বেশী রেমিট্যান্স এসেছে।
করোনা মহামারী পরবর্তী সময়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সেই রিজার্ভ থেকে নানা খাতে খরচ এবং অর্থ পাচার করায় ডলার সংকটে পড়ে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠরাই ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করে নিয়ে গেছে বিদেশে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন পাচার করা অর্থের অংক ২ লাখ কোটি টাকার বেশি। এ বিশাল অর্থের পাচারে বাংলাদেশের রিজার্ভ কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি, আমদানি রফতানি বাঁধাগ্রস্ত হয়েছে। দেশের মানুষ মূল্য স্ফীতির যাতাকলে পিষ্ট হয়েছে। সে পরিস্থিতির এখন এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন। গভর্নর বলেছেন ইতোমধ্যে পৌনে দুই বিলিয়ন ডলারের বিদেশী ঋণ পরিশোধ করেছে এই সাথে আরও এক বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে প্রকল্পের ঋণ ও সুদ বাবদ রিজার্ভে হাত না দিয়ে।
রিজার্ভে হাত না দিয়ে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা এ সরকারের একটা বড় কাজ বলা যায়। ফ্যাসিস্ট সরকার আড়াই বিলিয়ন বা আড়াই হাজার কোটি বকেয়া রেখে গিয়েছিল বিদ্যুৎসহ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে। এই দায় পরিশোধ করে ৭০ কোটি ডলারে নামিয়ে এনেছে বর্তমান  সরকার। রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় সরকারের এই অগ্রযাত্রা ইতিবাচক ধারায় ফিরছে অর্থনীতি। এতে অনিশ্চয়তা কাটতে শুরু করেছে তেল, গ্যাস, সারসহ প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে। 
রেমিট্যান্স বেড়ে যাওয়ার ফলে চলতি হিসাব ইতিবাচক হয়েছে। বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পাদনে চলতি হিসাবই তার সূচক। রিজার্ভ অর্থ থাকা মানে ঋণ পরিশোধে সক্ষমতা। আইএমএফের হিসেবে বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এ পরিমাণ অর্থে বাংলাদেশ চার মাসের আমদানি দায় পরিশোধ করতে পারবে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান সহনশীল থাকায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। হঠাৎ পণ্য রফতানি বন্ধের ঝুঁকি নেই। বিদ্যুৎ নিয়ে সমস্যাও কেটে গেছে। সাধারণ ছাত্রদের তদারকিতে নিত্যপণ্যের দাম কমতে, চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট ভাঙতে শুরু করেছে। অর্থনীতিবিদরাও বলছেন তিন মাস বয়সী সরকার দক্ষ পরিচালনার মাধ্যমে অর্থনীতিকে টেনে তুলতে পারছে। বিদায়ী সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বলেছিল ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল মেরামতে খরচ হবে ৪০০ কোটি, সেখানে খরচ হয়েছে ২১ কোটি টাকা। এখানেই বর্তমান সরকারের সাফল্য।