খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৩০ কার্তিক ১৪৩১

ভার্চুয়াল আলাপচারিতা

বাংলাদেশ-ভারতের সেনাপ্রধানের মধ্যে ‘পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে’ আলোচনা

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৪ এ.এম | ০৮ নভেম্বর ২০২৪


গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এই ঘটনার তিন মাস পর গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে ভার্চুয়াল আলাপচারিতা করেছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করার পর দুই দেশের সেনাপ্রধানদের মধ্যে এই প্রথম এ ধরনের আলাপচারিতা সংঘটিত হলো। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি বিবৃতি অনুসারে, দ্বিবেদী ‘ভিডিওকলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুজনে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে পাকিস্তান ও চীন-বাংলাদেশে তাদের প্রভাব আরও দৃঢ় করতে পারে এমন জল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে দু’দেশের সেনাপ্রধানের মধ্যে এই আলোচনা তাৎপর্যপূর্ণ। নয়াদিলি­ ও ঢাকা হাসিনা সরকারের আমলে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে এবং প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ফ্রন্টে সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে। 
বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকার কারণে ঐতিহাসিকভাবে দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলেও, হাসিনার শাসনামলে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে জানা যায়। কয়েক বছর ধরে নিয়মিত সফর, যৌথ প্রশিক্ষণ মহড়া এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে সামরিক হার্ডওয়্যার সরবরাহের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা বেড়েছে। ভারতের সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে জামানের ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা গেছে। 
ক‚টনৈতিক চ্যানেল খোলা রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেশটি এমন একটি রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে যেখানে সামরিক বাহিনী শুধুমাত্র দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই নয় বরং ক্ষমতার মসৃণ হস্তান্তরের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।  
বাংলাদেশে হিন্দু স¤প্রদায়ের সদস্যদের ওপর ‘হামলার’ খবরের পটভূমিতেও এই বৈঠকের গুরুত্ব রয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে আশ্বস্ত করেছে যে, তারা দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেই ফ্রন্টে শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৪,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যেখান দিয়ে অবৈধ অভিবাসন ছাড়াও মাদক, গবাদি পশু এবং অস্ত্র চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতিতে সীমান্তে এ ধরনের কর্মকান্ড বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ভারত। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে দ্বিবার্ষিক বৈঠক, এই মাসে হওয়ার কথা ছিল যে ইতিমধ্যেই স্থগিত হয়ে গেছে। পারস্পরিক উদ্বেগ ভাগাভাগি করতে এবং সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য এই ধরনের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস