খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

কলারোয়ায় সন্ত্রাসী ভাগ্নের অত্যাচার-নির্যাতনে অসহায় বৃদ্ধা দু’বোনের মানবেতর জীবনযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
১১:৫৪ পি.এম | ০৯ নভেম্বর ২০২৪


সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ভাগ্নে ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে বিধবা অসহায় মা-খালাদের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের উদ্দেশ্যে মারপিট এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কলারোয়া উপজেলার লোকাকুড়া গ্রামের মৃত শামছুদ্দিন দালালের স্ত্রী বৃদ্ধা আনোয়ারা খাতুন (৬৮) এই অভিযোগ করেন। 
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাড়িতে আমার প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা এক বোনকে সাথে নিয়ে বসবাস করি। কলারোয়ার লাহাকুড়া মৌজায় আর এস খতিয়ান ৪১৫, আর এস দাগ ৩১৪, এস এ দাগ ২৫৮, মোট ৬৬ শতক জমির মধ্যে ৩৩ শতক সম্পত্তির মালিক আমরা ৪ বোন এবং সেজ বোনের ছেলে একাই এলাকার মৃত জহরআলী দালালের ছেলে ফজলুর রহমান। বিগত ২০১৩ সালে স্বামীর অসুস্থ্যতার কারণে টাকার প্রয়োজনে ফজলুর রহমানের কাছে আমার ভাগের ৪ কাঠা জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই। এসময় সে শর্ত দেয় আমার প্রতিবন্ধী বোন ছায়রা বিবি’র জমিও তাকে লিখে দিতে হবে। স্বামীর অসুস্থ্যতার কারণে বাধ্য হয়ে বোনকে রাজি করে তাকে জমি লিখে দেই। জমি রেজিস্ট্রির সময় ফজলুর ৩ লক্ষ টাকা বাকি রাখে। পরবর্তীতে ওই টাকা না দিয়ে সে তালবাহানা করতে থাকে। ইতোমধ্যে আমার স্বামী মারা যায় এবং একমাত্র ছেলে বিদেশে গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এই মুহূর্র্তে ভাগ্নে ফজলুর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। 
বৃদ্ধা আনোয়ারা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ফজলুর আমাদের জমি বিক্রির বাকি ৩ লক্ষ টাকা না দিয়ে উল্টো আমাদের কাছে ৪লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করছে। টাকা না দিলে আমাদের হত্যা করবে মর্মে হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। ফজলু খুব হিংস্র প্রকতির লোক। স¤প্রতি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতার সুযোগে ফজলু এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে তুলেছে। এলাকার অসহায় নিরিহ মানুষের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়সহ নানাভাবে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। ফজলুর অত্যাচারে তার নিজের মাও ভারতে চলে যেতে বাধ্য হয়। পরে সেখানে মারা যান তার মা। 
তিনি আরো বলেন, আইন শৃঙ্খলার অবনতির সুযোগে ফজলু এখন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় আমাদের বাড়িতে গিয়ে ফজলু এবং তার স্ত্রী শাহানাজ ওরফে খুকু আমার লাগানো গাছ কাটতে থাকলে বাধা দেওয়ায় আমাকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এসময় তারা গলা টিপে ধরে আমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় আমি সে যাত্রা রক্ষা পাই। এসময় আমার প্রতিবন্ধী বড় বোন ছায়রা বিবিকেও মারপিট করে তারা। গত ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় ৪লক্ষ টাকার দাবিতে ফের আমাকে মারপিট করে ফজলু। এরপর থেকে রাস্তায় এবং আমার বাড়ি পিছনে ধারালো দা নিয়ে মহড়া দিচ্ছে সে। টাকা না দিলে আমাদের দু’বোনকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। ফলে তার ভয়ে আমরা অসহায় দুইবোন জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় মানবেতর জীবনযাপন করছি। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা শালিসের আশ্বাস দিলেও এলাকায় ফজলুর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে তারা শালিস করতে ব্যর্থ হন। তিনি সন্ত্রাসী ভাগ্নে ফজলুর হাত থেকে নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।