খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৩০ কার্তিক ১৪৩১

ঢাবি ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের আচরণ সংযত রাখার নির্দেশ

বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর কোনো টর্চার সেল হবে না : ঢাবি ছাত্রদল

খবর প্রতিবেদন |
০১:০০ এ.এম | ১১ নভেম্বর ২০২৪


যেকোনো পরিস্থিতিতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের আচরণ সংযত রাখার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস।
রোববার দুপুর আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে এ নির্দেশ দেন তিনি।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ফ্যাসিবাদের দোসররা ছাত্রদলের ইমেজকে সংকটে ফেলার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। সে ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। আপনারা চাল-চলন ও আচার-আচরণ অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করবেন। কোনো ভাবেই ফ্যাসিবাদের দোসরদের সুযোগ দেওয়া যাবে না। ছাত্রদলের রাজনীতি করতে হলে শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টকে মনে প্রাণে ধারণ করতে হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখতে হবে। এসব দেখে কষ্ট শিকার করে কেউ যদি ছাত্রদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হতে চায়, আমরা তাকে স্বাগত জানাব। কিন্তু কেউ যদি মনে করে, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ছাত্রদলের পতাকাতলে এসে আরাম-আয়েশে জীবন যাপন করবে, সে বোকার স্বর্গে বাস করছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিগত দিনগুলোতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়ে যেভাবে গেস্টরুম-গণরুম সংস্কৃতি কায়েম করে, জোর করে মিছিল-মিটিংয়ে নিয়ে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছিল, সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করছে, ছাত্রদলও তেমন করবে কী না। শিক্ষার্থীদের বলতে চাই। ছাত্রদল সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্টকে ধারণ করে রাজনীতি করবে। শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার বিরক্তি হয়, পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে, চাল-চলনে আঘাতপ্রাপ্ত হয়, এমন কোনো রাজনীতি ছাত্রদল অতীতেও করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না।
স¤প্রতি ক্যাম্পাসগুলোতে লেজুড় বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্রদল মেধা, মনন ও সৃজনশীলতাকে ধারণ করে সামনের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করতে চায়। ছাত্রদলের অভিভাবক বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি আমাদের সিনিয়র পারসন। আমরা বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে তারেক রহমানকে অভিহিত করি। সেই কর্মপরিকল্পনা যদি সমসাময়িক প্রেক্ষাপটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে, তাহলে অনুমতি দেন। সেটা অবশ্যই শিক্ষার্থী বান্ধব হয়। ছাত্রদল সব সময় নিজস্ব শক্তিতে বলিয়ান। তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত এবং শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ বিবেচনায় নিয়েই কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করে। 
অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগের দোসররা ছাত্রদল-ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা হলে হলে সংগঠিত হচ্ছে।  ছাত্র রাজনীতিকে কুলষিত করে এখন চাচ্ছে বাংলাদেশে যেন আর কোনো ছাত্র রাজনীতি না হয়। যেহেতু তারা রাজনীতি করতে পারবে না, তাই অন্য কেউ যেন রাজনীতি করতে না পারে। ছাত্রদল অঙ্গীকারবদ্ধ, বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর কোনো টর্চার সেল হবে না। গণরুম সংস্কৃতি তৈরি হবে না। ক্যাম্পাসে হবে মেধা ও জ্ঞানের চর্চা। ছাত্রদল এই ইতিবাচক চর্চার মধ্যে শিক্ষার্থীদের পক্ষে লড়াই সংগ্রাম জারি রাখবে।  
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে হেনস্তাকারী, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী এবং ফ্যাসিবাদি আমলে শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে মিছিল করে ছাত্রদল। মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে শুরু হয়ে দোয়েল চত্বর, রাজু ভাস্কর্য, কেন্দ্রীয় মসজিদ, মধুর ক্যান্টিন, ক্যাম্পাস শ্যাডো হয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।