খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

প্রথম দিনে দুই একর জমি উদ্ধার

মোংলা বন্দরের জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু

মোংলা প্রতিনিধি |
০১:২৬ এ.এম | ১২ নভেম্বর ২০২৪


মোংলা পুরাতন বন্দর এলাকার মেরিন ড্রাইভ ও মেইন শহরের সড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বন্দরের আন্তর্জাতিক ঘষিয়াখালী নৌচ্যানেল পাড়, মেরিন ড্রাইভ ও শহরের মেইন রোডের দুই পাশে নির্মাণাধীন অবৈধ কাঁচা-পাকা প্রায় ৭০টি ভবন ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, তিন তিনবার সতর্ক বার্তার নোটিশ দেয়া হলেও দখলদারা কোন কর্তপাত করেনি, আর বন্দোবস্ত দেয়ার কথা বলে না জানিয়েই কোটি টাকার সম্পদ ভেঙে নষ্ট করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলে দাবি স্থাপনায় বসবাসকারীদের। তবে প্রথম দিনে তৈরিকৃত স্থাপনায় দখল করা দুই একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিগুলে পর্যাক্রমে উদ্ধার করা হবে বলে দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের। 
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৫৩ সালে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম পরিচালোনায় অবকাঠামো তৈরির জন্য ১৩৪.৬০ একর জমি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্ধ নেয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর চালু হওয়ার পর থেকেই কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বন্দরের আওতাধীন পুরাতন বন্দর এলাকায় অবৈধ ভাবে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে বেশ কিছু জমি দখল করে রাখে। এতে প্রায় ১০ একর জমিতে ১ হাজার ১৭০টি কাঁচাপাকা স্থাপনা তৈরি করে দখল করা হয়েছে বলে দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের। গত কয়েক দিন আগে থেকে তাদের এ সকল স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য মাইকিংসহ তিন তিনবার নোটিশ প্রদান করা হলেও এতে কোন কর্তপাত করেনি দখলদাররা। পরিশেষে সোমবার উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রভাবশালীদের দখলে থাকা ১০ একর জমির মধ্য থেকে ১ম দিনে ৭০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করে দুই একর জমি দখল মুক্ত করা হয়েছে।
উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন বন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সনজিত কুমার চন্দ। এ সময় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক প্রশাসন মোঃ নুরুজ্জামান, উপ-পরিচালক বোর্ড জনসংযোগ বিভাগের মোঃ মাকরুজ্জামান, নিরাপত্তা কর্মকর্তা লেঃ নজরুল ইসলামসহ বন্দরের সম্পত্তি শাখার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীরা জানান যে জমিতে দোকান ঘর ও স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে, তা বরাদ্দ পাওয়ার জন্য সকল কাগজপত্র বন্দরে জমা দেয়া হয়েছে। তার পরেও ভেঙে দিয়ে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি করেছে । 
বন্দরের পরিচালক প্রশাসন মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, মোংলা বন্দরের প্রায় ১০ একর জমিতে ১১৭০টি অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে জোর পূর্বক দখলে রেখেছিল কিছু ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। আজ ২ একর জমি দখল মুক্ত করা হয়েছে। পর্যাক্রমে দখলদারের কবল থেকে বন্দরের সকল জমি উদ্ধার করা হবে এবং পুনরায় যাতে ওই জায়গায় স্থাপনা তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকবে বন্দরসহ নিরাপত্তা রক্ষীরা। 
উচ্ছেদ অভিযান পরচালনাকারী নির্বাহী মেজিস্ট্রেট সঞ্জিত কুমার চন্দ বলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জায়গায় দীর্ঘদিন যাবত কিছু অবৈধ দখলদাররা স্থাপনা তৈরি করে দখলে রেখেছিল। বহুবার জমির দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য মাইকিং বা নোটিশ জারি করলেও দখল ছাড়েনি। আজ তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কিছু অংশ জমি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি জমিও পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদের মাধ্যমে দখল মুক্ত করা হবে। উলে­খ্য এর আগে ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা চালু হলে ১৫২টি স্থাপনা ভেঙে দেয়া হলে আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগীরা।