খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

দু’সন্তান নিয়ে পালিয়েছে বিশ্বজিৎ ও তার স্ত্রী

সাতক্ষীরায় ছেলে-পুত্রবধূর হাতে নির্মম নির্যাতিত অবঃ স্কুল শিক্ষক অরবিন্দ মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
০১:২৮ এ.এম | ১২ নভেম্বর ২০২৪


সাতক্ষীরায় দুই হাত ও পা বেঁধে ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে অমানসিক নির্যাতনের শিকার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অরবিন্দু মন্ডল (৭৩) মারা গেছে। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রোববার বিকেল চারটার দিকে তিনি মারা যান। ধারণা করা হচ্ছে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মৃত অরবিন্দু মন্ডল সদর উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বাঁশতলা রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ছিলেন। 
এদিকে অরবিন্দ মন্ডলের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছালে দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে তার ছেলে বিশ্বজিৎ মন্ডল ও তার স্ত্রী কবিতা মন্ডল। তবে বাবার মৃত্যুর জন্য দাদা ও বৌদি ছাড়াও স্থানীয় ইউপি সদস্য সন্তোষ কুমার মন্ডল, একই গ্রামের কলেজ শিক্ষক গণেশ চন্দ্র গাইনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে প্রায়ত অরবিন্দ মন্ডলের মেয়ে অঞ্জনা মন্ডল।  তিনি জানান, বাবা বাঁশতলা রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ২০১০ সালের ৯ জুন অবসরে যান। ক্রমশঃ তার শ্রবণ শক্তি হারিয়ে যায়। বড় দিদি বনলতা সরকার ভারত থেকে বাবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। অবসরে যাওয়ার পর থেকে দাদা বিশ্বনাথ ও বৌদি কবিতা বাবাকে ভালো চোখে দেখতো না। তাকে কারণে অকারণে নির্যাতন করতো। 
বিষয়টি তার বড় দিদি ভারতের নৈহাটীর বাসিন্দা বনলতা সরকার জানতে পেরে স্থানীয় বাবুরাম কাকার ছেলে নকুলকে দিয়ে দাদা-বৌদির দ্বারা নির্যাতনের ছবি ভিডিও করে তাকে পাঠাতে বলে। গত বছর মা চপলা মন্ডল মারা যাওয়ার পর থেকে নিজেই রান্না করে খেতেন বাবা। ছোট কাকা সুভাষ মন্ডল, আত্মীয় স্বজন বা প্রতিবেশীরা তাকে খেতে দিতে চাইলেও ছেলে ও পুত্রবধূর গালাগালির কারণে কেউ খাবার দিতে সাহস পেত না। সে কারণে বাবা নিজেই রান্না করে খেতেন। গত ২ নভেম্বর সকালে বাবাকে বাড়ির উঠানে ফেলে মশারির নেট দিয়ে হাত-পা বেঁধে গালিগালাজের পাশাপাশি অমানসিক নির্যাতন করে। এ ঘটনার পর থেকে বৃদ্ধ বাবা খুবই ভেঙে পড়ে। 
তিনি আরো বলেন, রোববার দুপুরে দিকে হঠাৎ করে বাবা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাথে সাথে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিলে হয়তো ভালো চিকিৎসা পেত। দাদা-বৌদির অবহেলার কারণে অনেক দেরিতে তাকে হাসপাতালে নেওয়ায় চিকিৎসা না পেয়ে পথেই বাবা মারা যায়। বাবা মারা যাওয়ার পর পরই দুই সন্তানকে নিয়ে দাদা ও বৌদি বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।