খুলনা | শনিবার | ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

দেশের স্বার্থের সমীকরণে বৈদেশিক নীতির দিকে নজর রাখতে হবে

|
১২:১০ এ.এম | ১৪ নভেম্বর ২০২৪


ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় ওয়াশিংটন ঢাকা সম্পর্ক নিয়ে দেশের অনেকে মাথা ঘামাচ্ছে। কেউ কেউ উদ্বিগ্ন হয়ে নানা জল্পনা কল্পনা করছে। বিশেষ করে পতিত সরকারের অনুসারীরা ট্রাম্পের বিজয়কে নিজেদের বিজয় ধরে নিয়ে হালে পানি পেতে স্বস্তি খুঁজে ফিরছে। ট্রাম্পের ছবি নিয়ে নূর হোসেন চত্ত¡রে জমায়েত হওয়ার আওয়ামী আহŸান তার প্রমাণ। তবে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের দুঃচিন্তায় নেই বললেও একেবারে শংকামুক্ত হওয়ার কারণ নেই বলছেন কূটনীতিবিদরা। কূটনীতিবিদদের মতে, দেশের অন্তর্বর্তী সরকার বর্তমান যে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাতে মার্কিন সহায়তার যে প্রতিশ্র“তি রয়েছে তার উপর কতটা প্রভাব পড়বে কি পড়বে না সেটা বলতে অপেক্ষা করতে হবে।
তাহলে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় ড. ইউনুস সরকার কি ঝুঁকিতে পড়ে গেল? আমরা জানি বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসা এবং গণঅভ্যুত্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ডেমোক্রাটদের সমর্থন ছিল প্রকাশ্যে। কিন্তু ট্রাম্পের সাথে ভারতের সম্পর্ক ভালো থাকায় ভারত এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ পাবে কি না তা দেখতে হবে। নির্বাচনের আগে ভারতের প্রভাবে ট্রাম্পকে দিয়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা টুইট করা হয়েছে। সে টুইটকে এখন ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো কাজে লাগাচ্ছে। এতে ভারত যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসতে চাচ্ছে তা অপরিস্কার নয়। বিতাড়িত সরকারকে সুবিধা দিতে ভারতীয় এ কূট কৌশলকে ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারিরা আশায় বুক বাঁধছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন আমলে ভারত-মার্কিনের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তা যখন মেরামত হবে এই সুযোগে পতিত সরকারের চট করে ফিরে আসার অভিলাস পূর্ণ হতে পারে এমন স্বপ্ন ঘোরে শেখ হাসিনা বিজয়ী ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তাও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দাবি করে।
ড. ইউনুসের সাথে ডেমোক্রেট নেতাদের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক সবার জানা। অন্য দিকে ট্রাম্পের সাথে মোদির ভালো সম্পর্ক। বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারত কোনো ফ্যাক্টর হবে কি না এ প্রশ্নটা অমূলক নয়। তবে পররাষ্ট্র নীতির প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা বা কাঠামোগুলোর একটি শক্তিশালী ভূমিকা থাকে। সে কারণে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট বদল হলেও বৈদেশিক নীতিতে খুব বড় পরিবর্তন হয় না। ২০১৬ সালে ট্রাম্প যখন নির্বাচিত হন তখন ড. ইউনুস ট্রাম্পকে সমালোচনা করেছিলেন। ট্রাম্প ব্যক্তি কেন্দ্রিক সম্পর্কে বিশ্বাসী বিধায় ভারতের প্রভাব বেড়ে যেতে পারে। তবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের প্রশ্নে আগ্রহের জায়গা হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্য, কৌশলগত এবং ভূ-রাজনৈতিক। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে উলে­খ করে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বদল হলেও নীতির বদল হয় না। সুতরাং ওয়াশিংটন-ঢাকা সম্পর্কে তেমন পরিবর্তন হবে এমন শঙ্কার কারণ নেই। তবে স্বার্থের সমীকরণে বৈদেশিক নীতির দোলাচালের দিকে বলিষ্ঠ নজর রাখতে হবে।