খুলনা | শনিবার | ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সংহতি সমাবেশের ডাক রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৮ পি.এম | ২৩ নভেম্বর ২০২৪


সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন ও নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করে সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করতে দেওয়াসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ। আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব দাবি জানানো হয়।

রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জালাল আহমেদ বলেন, ‘সারা দেশে ৫০ লাখ মানুষ ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবহানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ঋণ নিয়ে, জমি বন্ধক রেখে, পুলিশি নির্যাতন, অবৈধ চাঁদাবাজি মোকাবিলা করে ৫০ লাখ মানুষ বছরে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার অবদান রাখছেন। তারা কোনও প্রণোদনা বা সরকারি সহায়তা ছাড়াই আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করা হলে অসংখ্য মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। তাই অতি দ্রুত সুপ্রিম কোর্টের আদেশ পুনর্বিবেচ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দিতে হবে।’

সমাবেশে সংগঠনের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, ‘নানাভাবে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ কাজ কারা করছে, কারা আমাদের শ্রমিকের বুকে লাথি মারলো। মিথ্যা মামলা ও হয়রানি করা হচ্ছে এসব বন্ধ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘গত ১২ বছর ধরে আমরা বলে আসছি, ব্যাটারিচালিত রিকশনা নিয়ে একটি নীতিমালা তৈরি করেন। সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে বলেছি। কারও পেটে লাথি মেরে, কারও জীবিকা নষ্ট করে কোনও রিট হয় না। বর্তমানে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এটা উস্কানি দিয়ে তৈরি করা। আমরা অতিবিলম্বে নীতিতিমালার বাস্তাবায়ন চাই। সুপ্রিম কোর্টের রায় আছে, মন্ত্রী পরিষদের রায় আছে তাহলে এ বিষয়টি নিয়ে আজ কেন নৈরাজ্য সৃষ্টি হচ্ছে?’

তাদের দাবিগুলো হলো– নীতিমালা অনুযায়ী ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিবন্ধন, চালকদের লাইসেন্স ও রুট পারমিট দেওয়া; কারিগরি ত্রুটি সংশোধন করে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়ন করা; ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশাসহ নিহত-আহত সব শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুর্নবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা; বিদ্যুৎ চুরি ও অপচয় বন্ধ করতে ইলেকট্রিক বা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা; প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত, স্বল্প গতির ও লোকাল যানবাহনের জন্য সার্ভিস রোড/বাই লেন নির্মাণ করে সড়কে বিশৃঙ্খলা ও দুর্ঘটনা নিরসন করা; ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক জব্দ বন্ধ করা এবং জব্দ করা গাড়ি ও ব্যাটারি ফেরত দেওয়া; সব শ্রমিকের জন্য আর্মি রেটে রেশন ও বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

গত ১৯ নভেম্বর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুলও জারি করেন আদালত। হাইকোর্টের আদেশের পরদিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা।

এরপর বুধবার (২০ নভেম্বর রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ, মিরপুর, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা।  বৃহস্পতিবারও (২১ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও,  মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলী ও ডেমরা এলাকায় রিকশাচালকরা জড়ো হন। এতে এসব এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে জুরাইনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। এতে আটকা পড়ে নারায়ণগঞ্জ ও নকশিকাঁথা নামে দুটি কমিউটার ট্রেন। এছাড়া বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।