খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ

খুলনা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ও মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের দুরবস্থা এবং অনিয়ম-দুর্নীতি নিরসনের দাবি

খবর বিজ্ঞপ্তি |
০২:৩৮ পি.এম | ২৮ নভেম্বর ২০২৪


দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী খুলনা। জাতীয় ক্রীড়াঙ্গনে খুলনা অঞ্চলের ক্রীড়াবিদরা প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এই খুলনাই সর্বক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার শাসনামলের প্রতিটি সেক্টরের মতো ক্রীড়াঙ্গনও অনিয়ম, দুর্নীতি ও দলবাজদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। কতিপয় ব্যক্তি বিশেষের ভাগ্য ও পকেটের উন্নয়ন ঘটলেও ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে জেলা ও বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, খুলনা বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের বেহাল অবস্থা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন খুলনা মহানগর মহিলাদল ও সচেতন নারী সমাজ।

আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় প্রদত্ত স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, খুলনা জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া মহিলা ক্রীড়া সংস্থা দীর্ঘদিন নির্বাচিত কমিটি নেই। এডহক ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ এ কমিটি শুধু রুটিন ওয়ার্ক পরিচালনা করেছেন। বিগত সময়ের কমিটিগুলোর অনিয়ম- দুর্নীতির কোন তদন্ততো হয়নি, বরং তারা বহাল তবিয়তে আধিপত্য বিস্তার করছে। ফ্যাসিবাদের কালো থাবায় উদীয়মান ও ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়াঙ্গন দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। হতাশ হয়ে পড়েছেন আমাদের নতুন প্রজন্মের নারী ক্রীড়াবিদরা।

অপরদিকে খুলনা বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স শুধু নামেই আছে। কমপ্লেক্স ভবন থাকলেও জিমনেশিয়ামে ব্যায়ামের যন্ত্রপাতি নেই। সুইমিংপুলটি মানসম্মত হয়নি। বর্ষা মৌসুমে জঙ্গলে রূপ নেয় ক্রীড়া সংস্থার মাঠ। নগরীর সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের উত্তরে প্রায় নয় একর (বড় ১৮ বিঘা) জমির ওপর গড়ে উঠেছে মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স। ২০১১ সালে প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনার মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শুরু হয়। কাজের মধ্যে ছিল ভবন সম্প্রসারণ, সীমানা প্রাচীর, জিমনেশিয়াম ও সুইমিংপুল নির্মাণ। দু'বছর মেয়াদে নির্মাণকাজ ২০১৩ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এই ক্রীড়া কমপ্লেক্সটিতে আট লেন বিশিষ্ট সুইমিং পুল, ৬ ধাপ বিশিষ্ট ৪০০ ফুট গ্যালারি, যার আসন সংখ্যা ১ হাজার ৬শ' এবং ফিলট্রেশন প্লান্ট, প্লেয়ার্স ড্রেসিং রুম ২টি, অফিস কক্ষ ২টি, সুইমিং লাউঞ্জ রুম ১টি ও ফার্স্ট এইড রুম ১টি থাকার কথা ছিল। জিমনেসিয়ামে ৪টি প্লেয়ার্স ড্রেসিং রুম, একটি কনফারেন্স রুম, ভিআইপি রুম ও ভিআইপি গ্যালারি, জিম রুম ও ৩টি মাঠ তৈরীর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তব চিত্র ছিলো অনেকটাই ভিন্ন। এই কমপ্লেক্সটি নির্মাণের জন্য ১৯ কোটি টাকার মতো ব্যয় হলেও ফ্যাসিবাদীদের ভাগবাটোয়ারায় খুলনাবাসী কিছুই পায়নি। জুলাই-আগস্টের ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী কবল থেকে দেশ মুক্ত হলেও খুলনার নারী ক্রীড়াঙ্গন ফ্যাসিবাদ দোসর মুক্ত হয়নি। নারী ক্রীড়াবিদদের এই দীর্ঘদিনের বৈষম্য, ক্রীড়া ক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি এখন সময়ের দাবি।

এসময় মহিলা দল ও খুলনার সচেতন নারী সমাজের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক নারীনেত্রী বেগম রেহানা ঈসা, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি আজিজা খানম এলিজা, সিনিয়র সহ-সভাপতি আনজিরা খাতুন, এ্যাড. হালিমা আক্তার খানম, নিঘাত সীমা, সালমা বেগম, মরিয়াম খাতুন মুন্নি, মলি চেীধুরী, রেশমি সুলতানা, এড. কামরুন্নাহার হেনা, মদিনা হাওলাদার, কাওছারী জাহান মঞ্জু প্রমূখ।