খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

সংস্কারের মাধ্যমে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করুন

|
১২:২৮ এ.এম | ৩০ নভেম্বর ২০২৪


সংস্কারের মাধ্যমেই কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা জনগণের কাক্সিক্ষত প্রত্যাশা। দেড় শতকের পুঞ্জিভূত জঞ্জাল পরিস্কার না করে নির্বাচন নির্ভেজাল হবে না। ফ্যাসিস্টদের পতনের পর সর্বস্তরের জনগণের সমর্থন এবং রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় ৮ আগস্ট যে সরকার দায়িত্ব্ গ্রহণ করেছেন তাকে জনগণের সরকার বললে এতটুকু অতুক্তি হবে না। ২১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন তাদের ভেতর রয়েছে সুধীজন ও ছাত্র প্রতিনিধি। 
৭ নভেম্বর সরকারের ৩ মাস পূর্তি হয়েছে। এ ৩ মাসে সরকারের কাছে জনগণের বিপুল প্রত্যাশা ছিল। প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে তা বলা যাবে না। বিশেষ করে পণ্যের দাম, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতি সরকারকে নজর রাখতে হবে। সরকারের মনে রাখতে হবে তাদের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সুশাসন ফিরিয়ে আনতেই হবে। অন্য দিকে দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থপাচার, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুম, হত্যা বন্ধ করতে হবে। সরকারের মনে রাখতে হবে দেশের জনগণ তাদের মুক্তি ও কল্যাণের জন্য বার বারজীবন দিয়েছে কিন্তু কাক্সিক্ষত মুক্তি মেলেনি। বিগত সরকার দেশ করেছিল কারাগারে পরিণত। এ অবস্থা থেকে ফিরে আসতে হাজার মানুষ রক্ত দিল, অগণিত আহত আদম সন্তান হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। তারা এ সরকারের কাছে কল্যাণ সমৃদ্ধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য অধীর আগ্রহে মুক্তির প্রহর গুণছে। 
গণ প্রত্যাশা পূরণে সরকার দশটি সংস্কার কমিশন গঠন করে কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। ৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা কমিশন প্রধানদের সাথে কাজের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেছেন। জন প্রশাসন কমিশন মুয়ীদ চৌধুরী কাজের অগ্রগতি জানিয়েছেন। পুলিশ সংস্কার কমিশন সরফরাজ ১০টি সভা, ৪টি বৈঠকের কথা ও জনমত চেয়ে ওয়েব সাইটে প্রশ্নমালা প্রকাশের কথা জানিয়েছেন। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদউল আলম মজুমদার প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করণ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ভোটার তালিকা সমন্বয়ের কথা জানিয়েছেন। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, সংবিধান সংস্কার কমিশন আলী রিয়াজ বলেছেন, পূর্ব ধারণা থেকে কমিশন বিছু করছে না। ত্যাগীজনদের কথা শোনার পর যা প্রয়োজন হবেতা সুপারিশ করতে কমিশন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এমনকি সাধারণ নাগরিকের মতামত ও প্রস্তাব ওয়েব সাইটে সংগ্রহ করা হবে। অবশ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ সরকার বাস্তবায়ন করবে কিনা সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয় হলেও সংস্কার কমিশনের সদস্য মাহফুজ আলম বলেন, সংবিধান বিষয়ের প্রশ্নটি একদফা ঘোষণার দিনই বাতিল হয়ে গেছে। কারণ সেখানে বলা হয়েছিল, পুরনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আমরা খারিজ করছি। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চাই। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নতুন সংবিধানের ইঙ্গিতই করে। এখন স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশে সংস্কার যেভাবে কাজ করছে তাতে একটা কল্যাণ রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপিত হবে বলেই ছাত্র জনতার প্রত্যাশা।