খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

বিএসএফ’র বাংলাদেশি হত্যা থামছেই না : ১৫ বছরে ঝরলো ৬০০ প্রাণ

খবর প্রতিবেদন |
০১:৫৮ পি.এম | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪


১৪ বছরের কিশোরী স্বর্ণা দাস, জয়ন্ত কুমার সিং, ফেলানী থেকে শুরু করে গত ১৫ বছরে বিএসএফ কর্তৃক ছয় শতাধিক বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হলেও ভারত সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বিএসএফও কোনো কোনো ক্ষেত্রে দায়সারা তদন্ত করে দায়িত্ব সেরেছে। হত্যাকান্ড বন্ধে বাংলাদেশ সরকার ও ভারত সরকারের জোরালো পদক্ষেপ আশা করে বাংলাদেশের মানুষ।
এদিকে বাংলাদেশে আ’লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রথমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ভারত সরকার অভিনন্দন জানালেও সা¤প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি করে।
ফলে নানা ঘটনা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন মিডিয়ায় বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা ও নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে, যা নিয়ে দু’দেশের সম্পর্কে চিড় ধরে। এরই মধ্যে পঞ্চগড়ের মোমিনপাড়া সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে আনোয়ার হোসেন (৪০) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া ও ভারতের শিংপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১-এর ৮/৯ নম্বর সাব পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে পতাকা বৈঠকের ডাক দেয়া হয়েছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন জানায়, শুক্রবার রাতের আঁধারে কয়েকজন বাংলাদেশি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যান। ফেরার পথে ভোরবেলা বিএসএফ তাদের দেখতে পেয়ে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই আনোয়ার মারা যান। পরে তার মরদেহ নিয়ে যান বিএসএফ সদস্যরা।
এ ঘটনায় পতাকা বৈঠক ডেকেছে বিজিবি। সেখানেই লাশ হস্তান্তর হবে বলে জানানো হয়।
প্রতি বছরই বহু বাংলাদেশি মারা যাচ্ছেন বিএসএফ’র গুলিতে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মায়ের সঙ্গে ভাইকে দেখতে ভারতের ত্রিপুরায় যাওয়ার সময় বিএসএফ’র গুলিতে প্রাণ যায় ১৪ বছর বয়সী স্বর্ণা দাসের। ঠাকুরগাঁওয়ে নিহত হন বাংলাদেশি কিশোর জয়ন্ত কুমার সিং। বাদ পড়েনি অক্টোবর, নভেম্বর মাসও। ৭ অক্টোবর কুমিল­-ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষীর বাহিনীর গুলিতে মারা যান এক বাংলাদেশি যুবক। নভেম্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে দুই বাংলাদেশি আহত হন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যন বলছে, গত ১৫ বছরে ছয় শতাধিক বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। আহত হয়েছেন সাত শতাধিক। বারবার প্রতিশ্র“তি দিয়ে ভারত রক্ষা না করায় উদ্বিগ্ন সচেতন নাগরিক মহল।
সীমান্ত হত্যার শেষ কোথায়- এমন প্রশ্ন কয়েক দশক ধরে চলে আসলেও দৃশ্যমান কোনো ফল মেলেনি।