খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

পাঠ্য বই হোক মানসম্পন্ন

|
০৩:৩৩ এ.এম | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪


দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যের বই পৌঁছে দেওয়া হয়। এটি একটি উদাহরণ। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মোট ৩৭ কোটি ৬৪ লাখ পাঠ্য বই ছাপানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের বই ৯ কোটি ২১ লাখ আর মাধ্যমিকের ২৮ কোটির কিছু বেশি, যার মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বই ছাপানো হবে এক লাখ ৯২ হাজার ৮২৫টি।
মাদ্রাসার দাখিল পর্যায়ে তিন কোটি ৩৬ লাখ আর দাখিল ভোকেশনালে এক কোটি ৯২ লাখ। এবার সেই কাজটি বোধ হয় একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কারণ আগামী বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যার খুব একটা পরিবর্তন না হলেও বইয়ের সংখ্যা বেড়েছে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত আগে বই ছিল ১৪টি করে।
পুরনো শিক্ষাক্রমে ফেরত যাওয়ায় আগামী বছর এসব শ্রেণির ২২টি করে বই ছাপাতে হবে। কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, শারীরিক শিক্ষাসহ বেশ কয়েকটি বই এবার নতুন করে যাবে। আবার যেহেতু বিভাগ বিভাজন ফিরছে, সে কারণে দশম শ্রেণিতে নতুন বই দিতে হবে। ফলে নবম-দশম শ্রেণির জন্য ৩৩টির মতো বই ছাপাতে হবে।
এতে সব মিলিয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষে আড়াই কোটির মতো বই বেড়ে গেছে। প্রতিবছর সাধারণত জুলাই-আগস্ট থেকে পাঠ্য বই ছাপার কাজ পুরোদমে শুরু হয়। এরপরও ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ বই দেওয়া সম্ভব হয় না। এবার অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় চলে এলেও একটি বই ছাপার কাজও শুরু হয়নি। যেভাবে কাজ এগোচ্ছে, তাতে আগামী নভেম্বরের আগে বই ছাপার কাজ শুরু করা সম্ভব নয়।
গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য সাড়ে ৩৭ কোটি পাঠ্য বই ছাপার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে। অন্যদিকে মুদ্রাকররা বলছেন, আগে জুলাই থেকে পর্যায়ক্রমে দরপত্র শুরু হতো। বই ছাপতে কমপক্ষে ৭২ দিন সময় দেওয়া হতো। এবার সব কাজ একসঙ্গে দেওয়া হচ্ছে। আর সময় কমিয়ে মাত্র ৪৫ দিন করা হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে শতভাগ বই দেওয়া দুঃসাধ্য।
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বোধ হয় নির্ভুল বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া। অনেক সময় কারিকুলাম আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করা হয়। পরিবর্তন আনা হয় কারিকুলামে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর পুরনো শিক্ষাক্রমে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত হয়। এসব বইয়ে সামান্য পরিমার্জন শেষে এ সপ্তাহেই কার্যাদেশ দেওয়া হতে পারে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে সামান্য পরিমার্জন লাগবে, যা শেষ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত। কারণ এসব শ্রেণির বইয়ে বড় ধরণের পরিমার্জনের প্রয়োজন পড়ছে, যা এখনো শেষ করা সম্ভব হয়নি। গত সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে পাঠ্য বই পরিমার্জনের কাজ। এত বিষয়ের বই পরিমার্জনে যত তাড়াতাড়িই করা হোক না কেন, সময়ের প্রয়োজন। 
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের তাই প্রত্যাশা অনেক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রাজ্ঞ শিক্ষাবিদকে পেয়েছি। আমরা আশা করব, তাঁর আন্তরিকতা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় যথাসময়ে নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে যাবে।