খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

শিথিলতার সুযোগে সরকার উৎখাতের চেষ্টা হচ্ছে : ফরহাদ মজহার

খবর প্রতিবেদন |
০৪:৩৫ এ.এম | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪


স¤প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহুাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ধর্মীয় নেতাদের সংলাপে উপস্থিত ছিলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। সংখ্যালঘু নির্যাতন, ভারতে অপপ্রচার, চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেফতার, মাজার ভাঙা, লালনমেলা হতে না দেওয়াসহ অনেক বিষয়ে জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন তিনি। 
সাক্ষাৎকারে তাকে প্রশ্ন করা হয়, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ধর্মীয় নেতাদের বৈঠকে আপনি তো ছিলেন, সেখানে সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব, উপস্থিতি ছিল?
জবাবে ফরহাদ মজহার বলেন, না না, অল্প সময়ের মধ্যে সব ধর্মের প্রতিনিধিত্বশীল উপস্থিতি তো সম্ভব নয়। অধিকাংশ ছিলেন। আমি সেখানে আমার বক্তব্যে বলেছি যে, যারা মূলত আন্দোলন করেছে সম্মিলিত সনাতনী জোট (সনাতন জাগরণ মঞ্চ) তারা ছিল না। হিন্দু মহাজোট, তারা ছিল না। তারা তো মূলত আন্দোলনটা করেছে। সেটা একটা দিক। এটা ছিল ধর্মীয় প্রতিনিধিদের একটা সম্মেলন। সে কারণে যারা পলিটিক্যাল গ্র“প তাদের হয়তো ডাকা হয়নি। আমি গিয়েছি, যেহেতু আমি একটা বিশেষ ঘরানার।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মানুষের অধিকার, নাগরিক অধিকার নিয়ে কথা বলি। ধর্মীয় অধিকার নিয়ে কথা বলা আমার কাজ। মাজার ভাঙা নিয়ে ডেফিনিটলি কথা বলেছি। যারা মাজার ভেঙেছে, তাদের ধরেনি, ধরেছে চিন্ময়কে (চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী)। এটা আমি বলেছি। 
প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকটি সর্বধর্ম প্রতিনিধিত্বশীল হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটার উত্তর আমার দেওয়া ঠিক হবে না, কারণ, তাদের সবার পরিচয়টা আমার সামনে নাই। সরকারের বিবেচনায় তারা যা করতে চেয়েছে, তা হলো একটা স¤প্রীতিসভা। সরকারও এটাকে প্রতিনিধিত্বশীল দাবি করে না। এটা একটা প্রক্রিয়া, সেটা সরকার শুরু করেছে। পরে হয়তো তারা আরো অনেকের সাথে কথা বলবে। ভারতের যে অত্যন্ত কুৎসিত প্রচারণা, সেটাকে মোকাবেলা করার জন্য এটা করেছে। যাদের ডেকেছেন, তারা নিজ নিজ ধর্মের দিক থেকে কথা বলেছেন। তারা অত্যন্ত সুন্দর কথা বলেছেন।
সরকারের দিক থেকে প্রতিরোধের ব্যবস্থা কি যথেষ্ট? আপনি কী মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখুন আমি কথাটা এই ভাবে বলি। এই সরকার কিন্তু একটা গণঅভ্যুত্থানের পূর্ণাঙ্গ বিজয়ের মধ্য দিয়ে হয়নি। আমরা একটা শিথিল সরকার পেয়েছি। সরকারের শিথিলতার সুযোগে সরকারকে উৎখাতের একটা চেষ্টা হচ্ছে। এই উৎখাতের চেষ্টা যারা করছে, তারা সরকারের বাইরে আছে, প্রশাসনে আছে। সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্য না থাকলে চিন্ময়কে গ্রেফতার করার তো যুক্তি নাই। আমি রংপুরে তার বক্তব্য শুনেছি। তার  বক্তব্য তো পরিষ্কার। তারা তো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে। 
তিনি আরও বলেন, তাদের কথা শুনতে হবে, তাদের দাবিগুলো শুনতে হবে। তারা আট দফা দাবি দিয়েছে, এর মধ্যে একটি দাবি আছে-তিন দিন ছুটি দিতে হবে। আপনি দুই দিন করেছেন। আরেক দিন বাড়ালে কী এমন সমস্যা? আশ্চর্য ব্যাপার! তাদের দাবির মধ্যে এমন কিছু নাই যা আপনি মানতে পারেন না। তারা একটা সংখ্যালঘু বোর্ড চেয়েছে। কী সমস্যা? তারা সংস্কৃত এবং পালি পড়তে চায়। এজন্য আলাদা একটা বোর্ড চায়। প্রত্যেকটা জেনুইন দাবি। সেটা নিয়ে আমরা কী করবো সেই আলোচনা করা যায়। একটা কমিশন করে দেন, তারা দেখবে। তাদের তো কোনো পলিটিক্যাল দাবি নাই।