খুলনা | রবিবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৮ পৌষ ১৪৩১

আইন-শৃঙ্খলার অবনতি মানুষকে স্বস্তি দিন

|
০১:১০ পি.এম | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪


আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের অসন্তুষ্টি চরমে উঠেছে। রাস্তায় বের হলেই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়তে হয়। ঘরেও কেউ নিরাপদ নয়। অহরহ ঘটছে চুরি-ডাকাতির ঘটনা। খুন, রাহাজানির পাশাপাশি চলছে বিস্তর চাঁদাবাজি। ফুটপাতের বাদাম বিক্রেতাকেও নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। আতঙ্কের বিষয় হলো অপরাধীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রের ছড়াছড়ি। টুঁ শব্দটি করার উপায় নেই।
গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে সারা দেশে চারশ’র বেশি ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে। লুটপাটকারী অপরাধীরা পাঁচজনের বেশি হলে ডাকাতি আর কম হলে দস্যুতার মামলা হয়। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে তিন শতাধিক মানুষ। জানা যায়, হতাহতদের বেশির ভাগই রিকশা কিংবা অটোচালক বা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলেছে, ৫ আগস্টের অব্যাহিত আগে ও পরে সারা দেশে অনেক থানা-ফাঁড়িতে হামলা ও লুট করা হয়। এ সময় পাঁচ হাজার ৭৫০টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ছয় লাখ ৫১ হাজার ৬০৯ রাউন্ড গুলি লুট হয়। এ পর্যন্ত যৌথ অভিযানে চার হাজার ৩৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। তবে এখনো লুট হওয়া এক হাজার ৪১৯টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং দুই লাখ ৬৩ হাজার ১৫৩ রাউন্ড গুলির খোঁজ নেই। ধারণা করা হয়, এগুলো অপরাধীরা ব্যবহার করছে।
এ ছাড়া অভিযোগ আছে, অবৈধ পথেও অনেক আগ্নেয়াস্ত্র দেশে প্রবেশ করছে এবং অপরাধীরা সেগুলো সংগ্রহ করছে। এদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোর জোরদার অভিযান বা প্রয়োজনীয় তৎপরতার অভাবে অপরাধীরা উৎসাহিত হচ্ছে। দিন দিন অপরাধীর সংখ্যা বাড়ছে। জানা যায়, শুধু রাজধানীতেই ডাকাতি ও দস্যুতায় পাঁচ শতাধিক দুর্বৃত্ত জড়িত রয়েছে। তাদের বেশির ভাগই ভাসমান। রাজধানীতে অপরাধ করেই আশপাশের এলাকায় পালিয়ে যায়। আইন-শৃঙ্খলা বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে যেসব অভিযান চলছে, তা যথেষ্ট নয়। কঠোরতম অভিযানের মাধ্যমে এই অপরাধীদের দমন করা না গেলে সমাজে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে।
মানুষ এক বেলা কম খেয়ে হলেও শান্তি ও সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে চায়, নিরাপদে ঘুমাতে চায়। মৌলিক চাহিদাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কিংবা শান্তি ও স্থিতি বিঘিœত হওয়ায় মানুষ আজ চরমভাবে হতাশ। মানুষের হতাশা যেন আর না বাড়ে সে জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। যেকোনো মূল্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে।