খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

অন্তর্বর্তী সরকারকে মির্জা ফখরুল

রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না

খবর প্রতিবেদন |
০৪:১৪ পি.এম | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছে, দয়া করে রাজনীতিকে বা রাজনৈতিক দলকে তাদের প্রতিপক্ষ বানাবেন না। শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস নিয়ে বিএনপি’র আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
‘রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য কাজ করছে’ বলে তথ্য ও স¤প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একজন উপদেষ্টা যখন এই কথা বলেন যে, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য কাজ করছে। এটা অত্যন্ত ঘোরতর অভিযোগ। আমি তীব্রভাবে এর নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ করছি এবং আমি মনে করি যে, এই ধরনের উক্তি তার প্রত্যাহার করা উচিত। দয়া করে রাজনৈতিক দলগুলোকে বা রাজনীতিকে আপনাদের প্রতিপক্ষ বানাবেন না। রাজনৈতিক দলগুলো আপনাদের সহযোগিতা করছে।
অনেকেই এখন একাত্তরকে একটু পেছনে রাখার চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা ইতিহাস বিকৃতির আরেক প্রচেষ্টা। এভাবে তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের মূল ইতিহাস থেকে জাতিকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়।
তিনি বলেন, আমাদের মূল ইতিহাস-এই স্বাধীন বাংলাদেশ আর ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে কেউ যেন খাটো না করে। ইতিহাস বিকৃতি যেন না ঘটে। গত ১৫ বছর ধরে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। ঠিক তেমনি এখন যাতে ইতিহাস বিকৃত না হয় সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, অনেকে মনে করছেন যে, হাসিনা পালিয়ে গেছে কাজ শেষ হয়ে গেছে। অনেকে বলেন-আমাদের এই আন্দোলন চলবে নির্বাচন পর্যন্ত। দেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকতা না পাওয়া পর্যন্ত বিএনপিকে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা গণতন্ত্রের কথা বলছি, সেই গণতন্ত্র কথার কথা নয়। এটা একটা কালচার, এটা একটা সংস্কৃতি। আপনি আমি কীভাবে কথা বলবো, আমি আমার প্রতিবেশীর সঙ্গে কেমন কথা বলবো, আমার রাজনীতির প্রতিপক্ষের সঙ্গে কীভাবে কথা বলব সেই বিষয়গুলো আমাদের গণতন্ত্রের ভেতর দিয়ে শিখতে হবে। গণতন্ত্র মানে এই নয় যে, আওয়ামী লীগ করলে তাকে গলা কেটে ফেলো আর বিএনপি করলে তার মুণ্ডু ছেদ করো। গণতন্ত্র হচ্ছে পরমত সহিষ্ণুতা। তোমার কথা বলার অধিকার আছে, আমার বিরুদ্ধেও কথা বলার অধিকার আছে আমি সেটাকে রক্ষা করবো, এটাই হচ্ছে গণতন্ত্র।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিটি মুহূর্ত এখন আমাদের সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে। আমাদের প্রতিটি কথা আমাদের মেপে কথা বলা দরকার। আমরা এমন কোনো কথা বলব না, যা আমাদের বিজয়কে নষ্ট করে দেয়, অর্জনকে বিনষ্ট করে দেয়। আমাদের দেশের ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। ভারতে আশ্রয় নিয়ে সে দ্রুত কাজ করছে। তারা (আওয়ামী লীগ) অনেক অপপ্রচার করছে, মিথ্যাচার করছে। যেগুলো বাংলাদেশের জন্য, এই বিপ্লবের জন্য অত্যন্ত উল্টো কথা। তাই আপনাদের গণতন্ত্রের পক্ষে, জনগণের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জবাব দিতে হবে।
ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের মিথ্যাচার-অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহŸান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল­াহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ প্রমুখ।