খুলনা | শুক্রবার | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

হামলাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রূপসায় সন্ত্রাসী হামলায় জখম বিএনপি কর্মী আরিফুজ্জামান গিয়াস

নিজস্ব প্রতিবেদক ও রূপসা প্রতিনিধি |
০৫:১৯ পি.এম | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪


জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রূপসায় সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর জখম বিএনপি কর্মী আরিফুজ্জামান গিয়াস (৪৫)। গত ১ সপ্তাহ যাবত সে টাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। খুলে রাখা হয়েছে তার মাথার হাড়ের একটি বড় অংশ। তবে এমন মর্মান্তিক সন্ত্রাসী হামলা হলেও রূপসা থানা পুলিশ একটি দ্বায়সারা মামলা নিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে। আর আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ তাদের ধরছে না এমন অভিযোগ আহতের স্বজনদের। তবে পুলিশ বলছে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গিয়াসের উপর নির্মম হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে আহতের স্বজনসহ এলাকাবাসী। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়নের আব্দুলের মোড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করে। মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন আব্দুস সাত্তার মোল­া, ইস্কান্দার আলী শেখ, ফরিদ শেখ, রাহুল শেখ, সৈয়দ মিন্টু, সৈয়দ লিটু, সৈয়দ জাহিদ, রুপা মোল­া, আহমদ ঢালী, মোস্তাফিজুর রহমান, মনির শেখ, শারমিন বেগম, ঝরনা বেগম, খুকুমণি প্রমুখ। বক্তারা বলেন গিয়াসের মাথার চাড়া ভেঙ্গে সেখানে অনাবৃত্ত অবস্থায় ঢাকা সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে, আর আসামিরা এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি মামলার বাদী ও স্বাক্ষীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছে। 
উলে­খ্য, হামলার শিকার আরিফুজ্জামান গিয়াস গত ২৯ নভেম্বর তার বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার টিকিট দেয়। নাসির মলি­ক জনৈক রুহুল শেখের মাধ্যমে ৫০০ টাকা এ্যাডভ্যান্স করে একটি ঘাট নেয়। নাসির ওই ঘাটে ভোর ৬টা হতে সকাল ৯টা পর্যন্ত মাছ ধরে চলে যায়। পরে সে তার দেয়া ৫শ’ টাকা ফেরত চেয়ে গোলমাল সৃষ্টি করে। তুচ্ছ এ ঘটনার জের ধরে গত ৮ ডিসেম্বর রাত ৮টায় স্থানীয় রাইফেলের মোড়ে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে মামলার এজাহারভক্ত আসামি দুর্জ্জনী মহল গ্রামের মুঃ আব্দুল জব্বার মলি­কের ছেলে জাফর মলি­ক (৪৬), মৃত আব্দুর রহমান মলি­কের ছেলে নাসির মলি­ক (৫০), আশিক মলি­ক (২৫), হাসিব মলি­ক (২৭), অনিক মলি­ক (২২), মৃত মুনা মলি­কের ছেলে আব্দুস সাত্তার মলি­ক (৬০), তার ছেলে সাজ্জাত মলি­কসহ (২৫), অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জন বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গিয়াসের উপর আকস্মিক হামলা চালায়। এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা গিয়াসকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে নানা হুমকি দিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রæত খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে ডাক্তার সিটি স্ক্যান করে জানায় তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ সময় তাকে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে রেফার্ড করেন। বর্তমানে তিনি মাথার চাড়া ভাঙা ও সেখানে অনাবৃত্ত অবস্থায় ঢাকা সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। 
এদিকে ঘটনার তিনদিন পর গিয়াসের ভাই মোঃ সাইফুল ইসলাম ছোটন মীর বাদী হয়ে রূপসা থানায় হত্যা প্রচেষ্টার মামলা দায়ের করেন।যার মামলা নং-৮, তাং ১১/১২/২৪, ধারা ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/১১৪/৫০৬ পেনাল কোড দঃবিঃ। তবে আরিফুজাজামানের মাথার চাড়া খুলে আলাদা হওয়ার পরও ৩২৬ ধারা না দেওয়ায় মামলার বাদী, সাক্ষী ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানান মামলাটি এস আই শরিফুল ইসলাম তদন্ত করছেন। আর আসামি গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে। তবে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে রয়েছে। মামলার ধারা সম্পর্কে তিনি জানান হাসপাতালের ইনজুরি রিপোর্ট পেলে ধারা পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে।