খুলনা | রবিবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৮ পৌষ ১৪৩১

দক্ষ জনশক্তি তৈরি করুন

|
১২:০০ এ.এম | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪


বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাস আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস জনশক্তি রপ্তানি। বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে ১৬৮টি দেশে কর্মী পাঠানো হয়। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৬২টি দেশে নামমাত্র কর্মী যাতায়াত করেন।
ইউরোপের নানা দেশে জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ হারাতে বসেছি আমরা। আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের বাস্তবতায় বাংলাদেশের শ্রমিকরা তুলনামূলকভাবে অদক্ষ। অনেক পেশায় আমাদের কর্মীরা কাক্সিক্ষত মাত্রায় দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি। তাই ভালো ও বেশি আয়ের পেশায় বাংলাদেশিদের নিয়োগ কম। আবার দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির বিষয়টি বাংলাদেশ গুরুত্ব দিয়ে কখনো ভেবেছে বলেও মনে হয় না। 
গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর কোটা পূরণ হচ্ছে না। চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১২ হাজার কর্মী পাঠানোর কোটা দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া, কিন্তু সেই জায়গায় সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র দুই হাজার ১৮১ জন কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়েছে। অভিবাসন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাকি তিন মাসে ৯ হাজার ৮১৯ জন কর্মী পাঠানো প্রায় অসম্ভব। এ কারণে গত বছরের মতো চলতি বছরও কোটা পূরণ করতে পারছে না বাংলাদেশ। অথচ ২০০৮ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী যাওয়া শুরু হয়। এই শ্রমবাজারে ধস নামার কারণ হিসেবে ভাষা সমস্যা, কাজ পরিবর্তন ও অদক্ষতাকে চিহ্নিত করেছেন অভিবাসন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করতে যাওয়া কর্মীরা শুধু ভাষা পরীক্ষায় পাশের জন্য প্রস্তুতি নিলেও ওই দেশে গিয়ে সেখানকার মানুষের সঙ্গে ঠিকভাবে কথা বলতে ও বুঝতে পারেন না। এছাড়া কাজের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ থেকে বেশির ভাগ অদক্ষ কর্মী ওই দেশে যান। তাঁরা সেখানকার কাজের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারেন না। দক্ষিণ কোরিয়ায় উৎপাদন ও জাহাজ নির্মাণ খাতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া হয়। এই খাতগুলোতে দক্ষ কর্মী নেয় দক্ষিণ কোরিয়া। সেখানে গিয়ে অনেক কর্মী দু-তিন মাস পর কোম্পানি পরিবর্তন করেন, যা নিয়োগকর্তাদের জন্য বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ তাঁরা দীর্ঘ সময়ের জন্য অন্য দেশের কর্মী নিয়ে আসেন।
বৈদেশিক কর্মসংস্থানের দিক থেকে পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ যথেষ্ট পিছিয়ে আছে। এর একটি প্রধান কারণ দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে আমাদের পিছিয়ে থাকা। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে আরো বেশি রেমিট্যান্স আয় সম্ভব হতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমাদের আরো উদ্যোগী হতে হবে। নতুন শ্রমবাজারও খুঁজে বের করতে হবে। আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদার পরিবর্তন ও দক্ষতার দিকে আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবে।