খুলনা | রবিবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৮ পৌষ ১৪৩১

বুয়েট শিক্ষার্থী মাসুদ হত্যার সুষ্ঠু বিচারসহ ৬ দাবি শিক্ষার্থীদের

খবর প্রতিবেদন |
০১:০৯ এ.এম | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪


পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় এক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ছেলে সাদমানের বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সিএসই (২০২১) ব্যাচের ছাত্র মোহতাসিম মাসুদ। একই সঙ্গে আহত হন বুয়েট শিক্ষার্থী অমিত সাহা এবং মোঃ মেহেদি হাসান খাঁন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার দুপুর ১২টায় বুয়েটের শহিদ মিনারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এসব দাবি জানান।
এক শিক্ষার্থী বলেন, রাতে নীলা মার্কেটের সামনে ৩০০ ফুট রাস্তায় সাবেক সেনা কর্মকর্তার এ-লেভেলে পড়–য়া ছেলে মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আমাদের এক ভাইকে, গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুই ভাই। এখন পর্যন্ত যে বিবরণ আমরা অমিতের কাছ থেকে জানতে পেরেছি তা হলো-সংকেত পেয়ে আমাদের তিন ভাই বাইক থামিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছিলেন। আমরা সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছি, এ ঘটনায় অভিযুক্ত চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমরা এ ঘটনায় গভীর ভাবে শোক জ্ঞাপন করছি। নিহতের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। সহপাঠীদের এ হত্যাকাণ্ডে আমরা যখন হতবিহবল তখন আমরা জানতে পারি, অভিযুক্ত গাড়িচালকের পিতা একজন প্রভাবশালী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। তার আমরা জানতে পেরেছি, আমাদের এক ভাইয়ের প্রাণহানির পর আরও দুই ভাই যখন হাসপাতালের বিছানায় মারাত্মক যন্ত্রণায় কাতর, ঠিক তখন গাড়িচালকের ক্ষমতাশালী আত্মীয়রা মামলার মোড় ঘোরানো, এমনকি মামলা যেন না নেওয়া হয় তার ব্যবস্থা করতে ব্যস্ত।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এই আকস্মিক হত্যাকান্ডের শোকে আমরা যখন হতবিহবল, ঠিক তখনই আমরা জানতে পারি যে, অভিযুক্ত গাড়িচালকের পিতা একজন প্রভাবশালী বিগ্রেডিয়ার জেনারেল। তার কারণে আমাদের এক ভাইয়ের যখন প্রাণ দিতে হলো, আমাদের আরও দুইভাই যখন মারাত্মকভাবে আহত, হাসপাতালের বিছানায় মারাত্মক যন্ত্রণায় কাতর, ঠিক তখন গাড়িচালকের ক্ষমতাশালী আত্মীয়রা মামলার মোড় ঘোরানোর, এমনকি মামলা যাতে না নেওয়া হয়, তার ব্যবস্থা করতে ব্যস্ত।
তারা আরও বলেন, অতীতেও আমরা দেখেছি যে অপরাধী যদি প্রভাবশালী হয়, তাহলে বিভিন্ন ভাবে প্রভাব খাটিয়ে, ভিকটিমের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে, হুমকি-ধামকি দিয়ে, ভিকটিমের পরিবারকে মামলা না করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে, প্রাথমিকভাবে মামলা হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন ধাপে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাব খাটায়, কিংবা আরও নানাভাবে ছাড় পেয়ে যায়। এটা আমরা হতে দিতে পারিনা কখনোই।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো : ১. যেকোনো মূল্যে এই হত্যাকান্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ। ২. আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার অবশ্যই বিবাদীপক্ষকে বহন করতে হবে। ৩. নিহত মাসুদের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে বিবাদীপক্ষকে বাধ্য করতে হবে। ৪. তদন্ত কার্যক্রমে বাধা প্রদানের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। ৫. আহতদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যাপারে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আহŸান জানাচ্ছি। ৬. সড়ক দুর্ঘটনার কারণে আর কারো প্রাণ যেন না যায় এবং সড়কে নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয়, সেই ব্যাপারে যথোপযুক্ত ভূমিকা রাখতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।