খুলনা | রবিবার | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৫ পৌষ ১৪৩১

মুদ্রা জালিয়াতিতে খুলনার আজিজ, অজয় ও তরিক হত্যায় শরীফ, হারুন ও সুলতান বাগেরহাটের রবিউল

ইন্টারপোলের তালিকায় যেসব বাংলাদেশির নাম

খবর ডেস্ক |
১২:৪৯ এ.এম | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪


জুলাই গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোল ওয়েবসাইটে রেড নোটিশ জারি হতে পারে-এমন খবর স¤প্রতি ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক এ পুলিশী সংস্থার ওয়েবসাইটে শেখ হাসিনার নাম দেখা যায়নি। এমন আলোচনার মধ্যে ভারতকে কূটনৈতিক চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনাকে ফেরাতে সেই চিঠি ইতোমধ্যে পেয়েছে নয়াদিল্লি।
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে সারা বিশ্বের ৬ হাজার ৬৫৮ জনের তালিকা রয়েছে। এই সাড়ে ছয় হাজারের মধ্যে ৬৩ জন বাংলাদেশি। দেশে বিদেশে অপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষ তাদের খুঁজছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ, আফ্রিকা ও বেলজিয়াম উলে­খযোগ্য।
বিদেশি রাষ্ট্র যেসব বাংলাদেশিকে খুঁজছে ৬৩ জনের মধ্যে চাঁদুপর সদরের রাজু ঢালীকে খুনের অভিযোগের মামলায় খুঁজছে সিঙ্গাপুর। আফ্রিকার দেশ ইসতাওয়ানি খুনের অভিযোগে খুঁজছে ঢাকার মোঃ মিলন ও লিটন ব্যাপারীকে। খুনের অভিযোগে নোয়াখালীর মিজান মিয়াকে খুঁজছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
মুদ্রা জালিয়াতির অভিযোগে খুলনার আজিজুর রহমান, অজয়বিশ্বাস ও তরিকুল ইসলাম, নোয়াখালীর সবুজ, গোপালগঞ্জের আব্দুল আলীম শরীফ, নারায়ণগঞ্জের মনির ভূঁইয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শফিকুলকে খুঁজছে ভারত।
ইউরোপের দেশ বেলজিয়াম খুনের অভিযোগে ল²ীপুরের খোরশেদ আলমকে খুঁজছে।
চোরাচালানির অভিযোগে নাটোরের সিরাজ মোস্তফাকে এবং খুনের অভিযোগে ফেনীর আলা উদ্দিনকে খুঁজছে মালয়েশিয়া। তছরুপের অভিযোগে হানিফকে খুঁজকে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ।
যৌন নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে জাহিদুল ইসলাম ও অস্ত্র মামলায় ফজলুল আমীন জাভেদকে খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশ যাদের খুঁজছে : হত্যার অভিযোগের মামলায় বাগেরহাটের রবিউল ইসলাম, টাঙ্গাইলের মোহাম্মদ তাজউদ্দীন ও বাবু আহমেদ রাতুল, চট্টগ্রামের ইউসুফ ও সাজ্জাদ হোসেন, ফরিদপুরের নাইম খান, বগুড়ার কালা জাহাঙ্গীর, গাজীপুরের নুরুল ও মজনু, কুমিল­ার খন্দকার আব্দুর রশীদ ও রাশেদ চৌধুরী, ঢাকার নুর চৌধুরী, নবী হোসাইন, তানভীর ইসলাম জয়, জিসান আহমেদ, তৌফিক আলম, প্রকাশ কুমার, জাফর আহমেদ, সালাউদ্দিন মিন্টু, নাজমুল আনসার, শরীফুল হক ডালিম, খুলনার শরীফুল হোসাইন, চট্টগ্রামের আমিনুর রসুল, নেত্রকোনার আব্দুল জাব্বার, বরিশালের গোলাম ফারুক অভি, সুব্রত বাইন, মুন্সীগঞ্জের রফিকুল ইসলাম, খুলনার হারুন শেখ ও সুলতান, নরসিংদীর মোসলেম উদ্দিন খান এবং খুনসহ বিভিন্ন অভিযোগে গাইবান্ধার চন্দন কুমার রায়কে খুঁজছে বাংলাদেশ।
মানবপাচারের অভিযোগে খুঁজছে কিশোরগঞ্জের জাফর ইকবাল, স্বপন, মিন্টু মিয়া ও তানজীরুল, মাদারীপুরের মোল­া নজরুল ইসলাম।
পর্নোগাফির অভিযোগে টাঙ্গাইলের ওয়াসিম, অস্ত্র মামলায় গিয়াস উদ্দিন, নির্যাতনের মামলায় চট্টগ্রামের অশোক কুমার দাশ, জালিয়াতির অভিযোগে জামালপুরের আমানুল­াহ এবং আতাউর রহমানকে খুঁজছে বাংলাদেশ।
এ ছাড়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত জাহিদ হোসেন খোকন, সৈয়দ মোঃ হাছান আলী, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল জব্বার ও সৈয়দ মোঃ হোসেনকেও খুঁজছে বাংলাদেশ।
গণমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত ইন্টারপোলের মাধ্যমে ১৭ জন অভিযুক্ত আসামিকে বাংলাদেশে ফেরত আনা গেছে।
১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইন্টারপোল বা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশনের সদস্য বিশ্বের ১৯৬টি দেশ। আন্তর্জাতিক এই সংস্থা বিশ্বকে নিরাপদ রাখতে পুলিশ এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞদের একটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত ও সমন্বয় করে। যদি একটি দেশের আসামি সেখানে অপরাধ করার পর অন্য দেশে চলে যায়, তখন সেই আসামিকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা লাগে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশকে সন্দেহভাজন অপরাধীর যাবতীয় তথ্য দিয়ে রেড নোটিশ জারির জন্য আবেদন করতে হয়।
ইন্টারপোল সদর দপ্তরে আবেদনের পর ওই অভিযুক্তের অপরাধ বিষয়ক যাবতীয় কাগজপত্র, মামলার অনুলিপি ইত্যাদি সংগ্রহ করে ইন্টারপোলের কাছে দিতে হয়। ইন্টারপোল সেই কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।