অপার সম্ভাবনাময় মোংলা সমুদ্র বন্দর দিয়ে বেড়েছে বিভিন্ন ব্রান্ডের রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি। অন্য বন্দরের তুলনায় মোংলা বন্দর দিয়ে দেশে আমদানিকারকরা প্রায় ৭০% গাড়ি খালাস করা হয়। যার ফলে গত অর্থ বছরে ১৫ হাজার ৩৪০টি গাড়ি আমদানির মধ্যদিয়ে রাজস্ব আদায়ে নবযুগের সূচনা হয় মোংলা বন্দরে। এভাবে ব্যবসায়ীরা প্রতিবছরই বিলাসবহুল রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি করে আসছে।
বন্দরের ব্যাবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে মোংলা বন্দরের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসায়ীদের একটি সেতু বন্ধন তৈরি হয়েছে। ঢাকার সাথে মোংলা বন্দরের দূরত্ব কমেছে অর্ধেকে। সড়ক পথ ভালো হওয়ায় এবং সময় কম লাগায় আমদানিকারকদের গাড়ি নিয়ে আসতে সময় ব্যয় হচ্ছে মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা। সে জন্য মোংলা বন্দরের মাধ্যমে অন্যান্য পণ্য আমদানির পাশাপাশি গাড়ি আমদানিও বেড়েছে। এ খাত থেকে প্রতি বছর উলে­খযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব আয় হচ্ছে বন্দরসহ সরকারেরও। আগের বছরগুলোর তুলনায় আমদানিও বাড়ছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১৫ হাজার ৩৪০টি গাড়ি আমদানি হয়েছে মোংলা বন্দর দিয়ে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ছিল ১৩ হাজার ৫৭৬টি। ঢাকার সাথে সুন্দর সড়ক পথ, মোংলা বন্দরে জাহাজ জট না থাকা ও গাড়ি রাখার পর্যাপ্ত জায়গা থাকায় এ বছর আরো বেশী গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি হবে বলেও জানান গাড়ি আমদানিকারক ব্যাবসায়ীরা। 
তারা জানান পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়িসহ বিভিন্ন পন্য আমদানির পাশাপাশি রপ্তানিকৃত পণ্যও বেড়েছে। যা থেকে গত অর্থ বছরে মোংলা বন্দর রাজস্ব আয় করেছে ৩১৯ কোটি টাকা। এমন আমদানি-রপ্তানির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে বন্দরের রাজস্ব আয় ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারা আরো বলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ এখন নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। পর্যাপ্ত গাড়ি রাখার জায়গা থাকায় ব্যবসায়ীরা এখন এ বন্দর দিয়ে গাড়িসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি করছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের যুগ্ম-সচিব কালাচাঁদ সিংহ বলেন, অন্য বন্দরের তুলনায় মোংলা বন্দরে গাড়ি রাখায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, গাড়ি রাখার সেট, সিসি ক্যামরাসহ ব্যাপক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এছাড়া বন্দর ব্যবহারকারীরা যাতে নিরাপদে ব্যবসা করতে পারে সেজন্য সকল ইকুপমেন্ট সংযোজন করে নতুন ভাবে বন্দরকে সাজিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পণ্য বোঝাই দেশি-বিদেশি জাহাজ এসে যেন দ্রুত খালাস করে মোংলা বন্দর ত্যাগ করতে পারে সে ব্যাপারেও সকল সহযোগিতার জন্য বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব সময় প্রস্তুত হয়ে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। 
উলে­খ্য মোংলা বন্দর দিয়ে ২০০৯ সালে সর্বপ্রথম রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি শুরু হয়। ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ১৫ বছরে মোংলা বন্দর দিয়ে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩৯টি রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি করা হয়েছে।