খুলনা | বুধবার | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

সেন্টমার্টিনে রিসোর্টে অগ্নিকাণ্ড, ৪ কোটি টাকার ক্ষতি

খবর প্রতিবেদন |
০৩:৪২ পি.এম | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫


সেন্টমার্টিনে ভয়াবহ আগুনে তিনটি রিসোর্ট পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি টাকা বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে সেন্টমার্টিনে সায়রি রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে পাশের আরও দু’টি রিসোর্ট আগুনে পুড়ে যায়। গলাচিপা বিচ ভ্যালি এবং কিংশুক রিসোর্ট অধিকাংশ পুড়ে গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শী ও রিসোর্ট মালিকদের বরাত দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জানান, মধ্যরাতে সেন্টমার্টিনের পশ্চিম সৈকতের গলাচিপায় সাইরি ইকো রিসোর্টের অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে মাল্টিপ্লাগে শর্টসার্কিট হয়ে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। এতে পাশে থাকা বিচ ভ্যালি, কিংশুক ইকো রিসোর্টের ও সাইরি ইকো রিসোর্টের অভ্যর্থনা কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সাইরি ইকো রিসোর্টের অভ্যর্থনা কক্ষে মাল্টিপ্লাগে শর্টসার্কিট হয়ে আগুনের উৎপত্তি হয়। অভ্যর্থনা কক্ষের ঠিক পেছনে বিচ ভ্যালি ইকো রিসোর্ট। বাতাসের কারণে মিনিটের মধ্যে বিচ ভ্যালির ছাউনিতে আগুন লেগে যায়। শুকনো কাঠ আর বাঁশ দিয়ে তৈরি বিচ ভ্যালি ইকো রিসোর্টে আগুন লাগার কয়েক মিনিটের মধ্যে পুরো রিসোর্টে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিচ ভ্যালিসহ পাশের কিংশুক ইকো রিসোর্ট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেন্টমার্টিন দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা এবং আগত পর্যটক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রচেষ্টায় ভোররাত ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এসব রিসোর্টে অবস্থান নেয়া পর্যটকরা বলেন, আগুনের সূত্রপাতের সময় অধিকাংশ পর্যটক রিসোর্টের বাইরে থাকায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে তাদের মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এবং নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে। কটেজগুলোতে আগুন নিয়ন্ত্রণের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সব কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

দ্বীপের বাসিন্দারা জানান, শীতকালে সবকিছু শুকনো থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে মুহূর্তের মধ্যে এসব রিসোর্ট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক জানান, দ্বীপে বিভিন্ন কারণে ব্যবসায়ীরা খুব বিপদের মধ্যে রয়েছেন। তার ওপর আগুনের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকারের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানো।

কিংশুক ইকো রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী সরওয়ার আলম বলেন, বউ-ছেলে নিয়ে দীর্ঘদিন পরে সেন্টমার্টিন এসেছি। আমার ছোট বাচ্চাদের সামনে আমার তিলে তিলে গড়া স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানটি পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। আমার সবকিছু নিমেষেই শেষ হয়ে গেছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, আমাদের একটা টিম সেখানে পৌঁছেছে। তারা আগুনের ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবে। আর ক্ষতিগ্রস্তদের কীভাবে সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।