খুলনা | বুধবার | ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ২৩ মাঘ ১৪৩১

সংবিধান সংস্কার # বাদ যাচ্ছে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা # সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ

নতুন ৫ মূলনীতির সুপারিশ : সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র

খবর প্রতিবেদন |
০১:০১ এ.এম | ১৬ জানুয়ারী ২০২৫


সংবিধান সংস্কার কমিশন রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে তিনটি বাদ দেয়ার সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র বহাল রেখে রাষ্ট্র পরিচালনার নতুন আরও চারটি মূলনীতির সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমানে সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতিগুলো হলো- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাহাত্তরে যে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল, তাতে রাষ্ট্র পরিচালনার এ চার মূলনীতি গৃহীত হয়েছিল।
বুধবার অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের সংস্কারের সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এ দিন আরও তিনটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। বাকি তিনটি কমিশন হলো-নির্বাচন ব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন।
এ সময় সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ তাদের প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি জানান, তারা সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ চালুর সুপারিশ করেছেন।
বর্তমানের চার মূলনীতির মধ্যে শুধু গণতন্ত্র রাখা হয়েছে। সুপারিশ করা নতুন পাঁচটি মূলনীতি হলো- সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র।
কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের জন-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন স্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে এই পাঁচটি নীতি প্রস্তাব করা হয়েছে। 
আর তিন মূলনীতি বাদ দেয়ার বিষয়ে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিশন সংবিধানের মূলনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এবং এ সংশ্লিষ্ট সংবিধানের ৮, ৯, ১০ ও ১২ অনুচ্ছেদগুলো বাদ দেয়ার সুপারিশ করছে।
সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। ফেব্র“য়ারিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই আলোচনা হবে বলে আজ এক সংবাদ ব্রিফিংয়ের সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রস্তুত করতে গিয়ে প্রায় এক লাখ মানুষের মতামত নেয়ার কথা জানান আলী রীয়াজ। কমিশনের সদস্যদের পাশাপাশি ৩২ জন গবেষক এতে কাজ করেছেন।
সুপারিশগুলোর বিষয়ে রাজনৈতিক ঐক্যের আশা করে তিনি বলেন, একটা ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্নের ধারাবাহিকতায় আজকে আসলে কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা এই প্রস্তাবগুলো, সুপারিশগুলো রাখছি। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এক ধরনের ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে।