খুলনা | বুধবার | ১২ মার্চ ২০২৫ | ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ ইবতেদায়ি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি

|
১২:০৮ এ.এম | ০৮ মার্চ ২০২৫


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সমৃদ্ধ করা ও সুশিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তথা জাতির শিক্ষা বিকাশের জন্য এমপিওভুক্ত করা একটি জরুরি পদ্ধতি। কারণ এর সঙ্গে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা, জীবন-জীবিকা, মান-মর্যাদার বিষয়টি জড়িত। শিক্ষা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। এই অত্যাবশ্যক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সচেতন জাতি সর্বাধিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।
জনপ্রতিনিধিত্বশীল রাষ্ট্র জাতিকে শিক্ষার আলোতে সুন্দর নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। অন্তর্বর্তী সরকারের শুভ উদ্যোগ-ইবতেদায়ি শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ৪০ বছর পর এক হাজার ৫১৯ ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ছয় হাজারের বেশি শিক্ষকের ভাগ্য খুলতে যাচ্ছে। তাঁদের এমপিওভুক্তির প্রস্তাবের ফাইলে নিজের শেষ কর্মদিবসে স্বাক্ষর করে গেছেন বিদায়ি শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এখন প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন পেলেই এই শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হবেন। বিদায়ি শিক্ষা উপদেষ্টা এমপিওভুক্ত (বেসরকারি) শিক্ষকদের জন্যও সুখবর দিয়ে গেছেন। শিক্ষকদের উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। শিক্ষকদের অবসর এবং কল্যাণ ভাতার জন্য একটি তহবিল তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বিদায়ি শিক্ষা উপদেষ্টা।
আমাদের দেশে শিক্ষকরাই সবচেয়ে বেশি অবহেলার শিকার চাকুরির ক্ষেত্রে। তাঁদের জীবনযাপন করার মতো বা ন্যূনতম জীবনমান সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় বেতন-ভাতার জোগান দেওয়া হয় না। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসরকালীন সুবিধা দিতে বেতন থেকে ১০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়। অথচ শিক্ষকদের অবসর সুবিধা পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধার অনেক আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে।
প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অভাবে এসব আবেদন নিষ্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। অবসর সুবিধার জন্য বছরের পর বছর শিক্ষকদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কারো কারো ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশি সময় চলে যায়। বিদায়ি শিক্ষা উপদেষ্টা এ বিষয়ে একটি সুখবর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শিক্ষকদের অবসর এবং কল্যাণ ভাতার জন্য একটি তহবিল তৈরি করা হচ্ছে। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কল্যাণ ভাতা এবং অবসর ভাতা—এটি হলো তাঁদের সবচেয়ে ন্যায্য দাবি উলে­খ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, তাঁদের ওই দাবিটিই সবচেয়ে আগে মেটানো উচিত।    
শিক্ষকদের অর্থনৈতিক দীনতার কারণে মেধাবী ছাত্ররা পাস করে শিক্ষকতা পেশায় যেতে চায় না। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া শিক্ষার প্রসার কখনো সম্ভব নয়। জাতির শিক্ষা বিকাশের জন্য এমপিওভুক্ত করা একটি জরুরি পদ্ধতি। কারণ এর সঙ্গে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা, জীবন-জীবিকা, মান-মর্যাদার বিষয়টি জড়িত, যা সরাসরি শিক্ষার বিকাশে বিপত্তি সৃষ্টি করতে পারে। সরকারের এই শুভ উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়।