খুলনা | বুধবার | ১২ মার্চ ২০২৫ | ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিলের নির্দেশ ট্রাম্পের

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪১ এ.এম | ১২ মার্চ ২০২৫


যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক জো বাইডেন প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার তিনি বলেছেন, সাবেক ওই কর্মকর্তাদের গোপনীয় তথ্যে প্রবেশাধিকারও নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।
গ্যাবার্ডের সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট ধরে রয়টার্স এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই কর্মকর্তাদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বি¬ঙ্কেন, সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান, সাবেক ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল লিসা মোনাকো। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনাকারী নিউ ইয়র্কের এ্যাটর্নি জেনারেল লেটিটিয়া জেমস এবং ম্যানহটন ডিস্ট্রিক্ট এ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ।
এ প্রসঙ্গে পলিটিকো লিখেছে, বাইডেন প্রশাসনের কয়েকজনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র যে বাতিল করা হবে, তা জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরেই ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তাদের মধ্যে মোনাকো ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে হামলাকারী ট্রাম্প সমর্থকদের বিচারের তত্ত¡াবধান করেছিলেন। আর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অপরাধ ও ব্যবসায়িক অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে নেতৃত্ব দেন অ্যালভিন ব্র্যাগ।
চেক প্রজাতন্ত্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত নর্ম আইসেন এবং এফবিআইয়ের সাবেক জেনারেল কাউন্সেল এ্যান্ড্রু উইজম্যানসহ অন্য আইনি শত্র“রাও তাদের ছাড়পত্র বাতিল করতে দেখেছেন।
গ্যাবার্ড বলেন, ট্রাম্পের আগের ঘোষণা অনুযায়ী সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আর প্রেসিডেন্টের ‘ডেইলি ব্রিফ’ (গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ) পাবেন না। সাধারণত মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সাবেক প্রেসিডেন্টরা এই প্রতিবেদন পেয়ে থাকেন। যদিও ট্রাম্পের ক্ষেত্রে ২০২১ সালে এই সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের একটি ল্যাপটপের বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রতিবেদনগুলো ‘রাশিয়ান মিথ্যা তথ্য’ বলে যুক্তি দেখিয়ে ২০২০ সালের একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করা ৫১ জন প্রাক্তন কর্মকর্তার ছাড়পত্র আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেছেন গ্যাবার্ড।
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে নিউ ইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে বলেছিল, একটি কম্পিউটার মেরামতের দোকানে বাইডেনপুত্র হান্টার বাইডেনের ফেলে আসা একটি ল্যাপটপ থেকে কিছু ই- মেইল ফাঁস হয়েছে। তাতে দেখা যায়, হান্টার তার বাবাকে ইউক্রেইনের জ্বালানি খাতের এক ধনকুবের সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছিলেন। দু’জনের মধ্যে একটি  বৈঠক আয়োজন নিয়েও কথা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সে বৈঠক হয়েছিল কি না, তা নিয়ে কোনো ই-মেইল রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
ওই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর ৫১ জন এক চিঠিতে স্বাক্ষর করে বলেছিলেন, হান্টারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে তারা রুশ ‘কুতথ্যের’ যোগসাজশ দেখতে পাচ্ছেন।
সাবেক এই ৫১ কর্মকর্তারও নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিলের কথা জানিয়েছেন গ্যাবার্ড। দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে ছাড়পত্র বাতিলের নির্দেশ দেন। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে কতজনের ছাড়পত্র বহাল আছে এবং শ্রেণিবদ্ধ নথিতে তাদের প্রবেশাধিকার আছে, তা স্পষ্ট নয়।
পলিটিকো লিখেছে, ট্রাম্প তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের অস্ত্র হিসেবে নিরাপত্তা ছাড়পত্রকে ব্যবহার করছেন বলে ওঠা অভিযোগ নতুন পদক্ষেপের পর আরও জোরালো হতে পারে।
গত ফেব্র“য়ারিতে বাইডেনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করেন ট্রাম্প। তিনি ল ফার্ম কোভিংটন এ্যান্ড বার্লিংয়ের আইনজীবীদের ছাড়পত্র বাতিলেরও পদক্ষেপ নেন। ওই ফার্মটি বিশেষ কাউন্সেল জ্যাক স্মিথকে বিনামূল্যে আইনি পরিষেবা দিয়েছিল।
আরেক ল ফার্ম পারকিন্স কোইয়ের আইনজীবীরাও একই খড়্গে পড়েছে, যারা ট্রাম্পের বিদেশি ব্যবসায়িক লেনদেনের তদন্তকারী ‘স্টিল ডসিয়ার’কে সহযোগিতা করেছিলেন। ট্রাম্প তার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওসহ রিপাবলিকান সমালোচকদের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থা নিতে দ্বিধাবোধ করেননি।