খুলনা | বুধবার | ১২ মার্চ ২০২৫ | ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

বটিয়াঘাটার শচীন্দ্র নাথ শীলের রিট

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বাইরে ব্যক্তি পর্যায়ে সুদ ও দাদন ব্যবসা বন্ধে রুল হাইকোর্টের

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৪ এ.এম | ১২ মার্চ ২০২৫


ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বাইরে ব্যক্তি পর্যায়ে সুদ ও দাদন ব্যবসায়ীদের চড়া সুদে লেনদেন বন্ধ এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেন। গতকাল  আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আপিল বিভাগের আইনজীবী মোঃ ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার উদমারা গ্রামের বাসিন্দা শচীন্দ্র নাথ শীল এ বিষয়ে গত ১১ ফেব্র“য়ারি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করেন। শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে ওই ব্যক্তি বেআইনি চড়া সুদের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতারণা ও হয়রানিমূলক মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। ওই আবেদনে তিনি বলেন, আমি শচীন্দ্র নাথ শীল খুলনা জেলাধীন বটিয়াঘাটা উপজেলার উদমারা গ্রামের বাসিন্দা। সমাজে যেখানে প্রতারণা ও জালিয়াতি চক্রের দৌরাত্ম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শেষ বয়সে এহেন অন্যায়কে সহ্য করতে না পেরে প্রতিবাদ করে চলেছি। আমার বিরুদ্ধে ভয়াবহ প্রতারণা ও হয়রানিমূলক মামলা করেছে। আমার স্ত্রী জ্যোৎস্না সরকার তার পিতৃহারা এইদের বিশেষ প্রয়োজন মিটানোর জন্য আমার অজান্তে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তার সহকর্মীদের কাছ থেকে কয়েকবারে সুদে আনুমানিক দুই লক্ষ টাকা নেয়।
উক্ত টাকার প্রতি মাসে চড়া সুদ প্রদান করতে গিয়ে অন্য লোকের কাছ থেকে একইভাবে সুদ আনে। আমার অজান্তে চড়া সুদের ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পড়ে যখন মৃত্যু পথযাত্রী তখন মহান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় জানতে পারি টাকা নিয়েছে। আমার পরিবার এবং তার কাছ থেকে সবকিছু শুনে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় ১৬১নং সাধারণ ডায়েরি করে।
সুদের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকেই তাদের ভুল বুঝতে পেরে সত্য ঘটনা খুলে বলায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে বেআইনি হলেও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি। যার অনেক দালিলিক প্রমাণাদি ও বাধ্য হয়ে মোবাইলের আলাপচারিতা রেকর্ড করেছি, যা প্রমাণ হিসেবে গচ্ছিত আছে।
শেখ মোঃ জামাল উদ্দিন ২০১৯ সালের ২০ ফেব্র“য়ারি অগ্রণী ব্যাংক, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখায় তার ব্যাংক হিসাব নং-০২০০০০৪৪৭০০৫৫ (৩৪০২৪৩৯৬) থেকে ০৬৫৫৫৪১ নম্বরগুলোর মাধ্যমে ৩,৫০,০০০ (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা জ্যোৎস্না সরকারকে দেয় এবং সিকিউরিটি হিসেবে জ্যোৎস্না সরকার এর কাছ থেকে তার ব্যাংক এ্যাকাউনেন্টর ১১৮১-০৬৫৪৬৬৯ নম্বর ব্লাঙ্ক চেক রাখে।
তবে শিরিন সুলতানা (স্টাফ নার্স, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা) ও তার স্বামী শেখ মোঃ জামাল উদ্দিন (মোবা:-০১৭১৩-৯১২৬৯৪) প্রতারক, অর্থলোভী ও জালিয়াতি মনোভাবাপন্ন হওয়ায় ২০১৯ সালের ২০ ফেব্র“য়ারি চেকের মাধ্যমে দেওয়া টাকা আড়াল করে আসামির সরলতা ও বোকামীর সুযোগের অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে সিকিউরিটি হিসেবে রাখা ১১৮১-০৬৫৪৬৬৯ নম্বর ব্লাঙ্ক চেকে মাত্র তিন দিন পর উলে­খ করে নিজেরা নাম ও টাকার অঙ্ক (ত্রিশ লক্ষ) লিখে নগদে ধার দিয়েছে মর্মে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। যা হাতের লেখা যাচাই করলেও সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
যেহেতু শেখ মোঃ জামাল উদ্দিনের নম্বর ৪৮৭৫৮৩১১০৬৪১ তাই ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে আয়কর হিসাব যাচাই করলে প্রকৃত অর্থের হিসাব পাওয়া যাবে। তাদের কাছে সিকিউরিটি হিসেবে আমার স্ত্রীর জমা রাখা ব্ল্যাঙ্ক চেকের অপব্যবহার করে নিজেরা মামলা করে। এছাড়াও আরও কয়েকটি হয়রানিমূলক মামলা করে। তাছাড়া অন্য সুদের ব্যবসায়ী লিলি, খুলনা মেডিকেল কলেজের স্টাফ কোয়ার্টার সুলতানা ইয়াসমিন, বিশোকা রানী কুকু, আসমা রহমান, রিতীমা রানী বিশ্বাস মামলা দায়ের করেছে।