খুলনা | শুক্রবার | ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১

ট্রাম্পের ঘোষণার পর বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়া

খবর প্রতিবেদন |
০১:০৭ এ.এম | ০৪ এপ্রিল ২০২৫


বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কার্যত প্রায় সব দেশের ওপর আরোপ করা এই শুল্ক বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এই ঘোষণাকে অনেকে ট্রেড ওয়ার বা শুল্ক যুদ্ধের সূচনা হিসেবে দেখছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার পর চীন, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন : ইইউ মার্কিন মোটরসাইকেল, হুইস্কি এবং জিন্সের মতো পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। এই শুল্ককে ‘বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় আঘাত’ বলে মন্তব্য করেছেন ইউনিয়নের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন। তিনি বলেন, আমদানির ওপর নতুন শুল্ক আরোপের কারণে অনিশ্চয়তা বাড়বে, যা বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে। 
ইইউ বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফকোভিচ জানান, তিনি আজ শুক্রবার মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গ কথা বলবেন এবং শুল্ক নিয়ে আরও আলোচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেবেন। তিনি বলেন, যদি আমরা একটি ন্যায্য চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারি, তাহলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না।
চীন : এশিয়ার পরাশক্তি দেশটির ওপর ৩৪ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপের পর চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেইজিং পারস্পরিক শুল্কের ‘দৃঢ় বিরোধিতা করে’ এবং নিজস্ব অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। 
জাপান : বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়োজি মুটো এই পারস্পরিক শুল্ক আরোপকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, জাপানকে শুল্ক ব্যবস্থা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করা হবে।
কানাডা : প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, কানাডা ‘প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে এই শুল্কের বিরুদ্ধে লড়াই করবে’ এবং জোড়ালোভাবে কাজ করবে।
ব্রাজিল : লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ বলেছে, তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ মূল্যায়ন করছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানিয়েছে দেশটি।
এর আগের দিন ব্রাজিলের কংগ্রেস একটি বিল অনুমোদন করেছে, যাতে ব্রাজিলের পণ্য ও পরিষেবাগুলোকে লক্ষ্য করে সম্ভাব্য 'একতরফা বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া' জানাতে একটি আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর মধ্যে শুল্কের মতো পাল্টা ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জার্মানি : বিদায়ী জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেছেন, এই শুল্ক ‘মৌলিকভাবে ভুল’ এবং এটি বিশ্বজুড়ে ও আমেরিকার ক্ষতি করবে। আমরা সহযোগিতা চাই, সংঘাত নয়। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষা করব।
যুক্তরাজ্য : প্রধানমন্ত্রী কাইর স্টারমার বলেছেন, ব্রিটেন আমেরিকার সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির জন্য কাজ চালিয়ে যাবে এবং বাণিজ্য যুদ্ধ 'আমাদের জাতীয় স্বার্থে নয়'। তবে তিনি বলেন, কেবল তখনই একটি চুক্তি করবেন, যদি এটি সঠিক হয়।
ফ্রান্স : প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আজ শুক্রবার এলিসি প্রাসাদে নতুন শুল্ক আরোপের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িক খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।
ইতালি : প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, সিদ্ধান্তটি ‘ভুল’ হয়েছে। তবে তিনি ‘বাণিজ্য যুদ্ধ প্রতিরোধ করতে’ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তির বিষয়ে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া : শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হান ডাক-সু অটোমোবাইলসহ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাগুলোর জন্য জরুরি সহায়তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্পেন : স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, স্পেন ‘একটি উন্মুক্ত বিশ্বের প্রতি প্রতিশ্র“তিবদ্ধ থাকবে’।
বেলজিয়াম : বেলজিয়ামের উপ-প্রধানমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভোট বলেছেন, ‘দিয়াশলাই নিয়ে খেললে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুড়ে যাবে’। তিনি উলে­খ করেন, এটি দুঃখজনক যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘সকলের ওপর, বিশেষ করে তার অংশীদারদের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে একতরফাভাবে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার ওপর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে’।
নরওয়ে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমেরিকার মিত্র এবং প্রতিপক্ষ উভয়ের ওপর শুল্ক আরোপ ন্যাটো চুক্তির একটি অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করতে পারে। ‘চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশ’ মনে রাখা উচিত।