খুলনা | শনিবার | ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মিছিলে হামলা

বাগেরহাটে সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট |
০২:৩২ এ.এম | ০৯ এপ্রিল ২০২৫


বাগেরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ ৬৭ জনের নাম উলে­খ এবং অজ্ঞাতনামা এক থেকে দেড়শ’ জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের গোপালকাঠি গ্রামের বাসিন্দা জুলাই আগস্টে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন আন্দোলনে নির্যাতিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মিরাজ সেখ আদালতে ওই মামলা করেন। 
বাগেরহাটের বিচারিক আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক আজমীরা ফেরদৌসী মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে গত বছরের ৪ আগস্ট সকালে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা বাগেরহাট আদালত চত্বরে পৌঁছালে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, বোমা নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও গুলি বর্ষণ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাতি, লোহার রড দিয়ে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে এবং তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। হামলায় আন্দোলনকারীদের অনেকেই কমবেশি আহত হন। এই আন্দোলনকারী প্রাণের ভয়ে আদালতে ও থানায় মামলা করতে সাহস পাননি বলে ওই মামলার এজাহারে উলে­খ করা হয়েছে। 
মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন, বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, সাবেক সংসদ সদস্য মীর শওকাত আলী বাদশা, পুলিশ সুপারের পদমর্যাদার বাগেরহাটের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ আসাদুজ্জামান, আরেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাসুদ রানা, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি (ডিবি) মোঃ মামুনুর রশীদ, বাগেরহাট সদর মডেল থানার ওসি মোঃ সাইদুর রহমান, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক (ডিআই-১) সৈয়দ বাবুল আক্তার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভূঁইয়া হেমায়েত উদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাগেরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র খান হাবিবুর রহমান, জেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার নাসির উদ্দিন, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক খান আবু বক্কর, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি লুনা সিদ্দিকী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ফজলে সাঈদ ডাবলু, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার নাহিয়ান আল সুলতান ওশান, ব্যবসায়ী তাপস কুমার সাহা। আসামির তালিকায় আইনজীবী, পুলিশ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের নাম উলে­খ রয়েছে।
মামলার নথির বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বাগেরহাট জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলী (পিপি) এস এম মাহাবুব মোর্শেদ লালন বলেন, নির্যাতিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এক সমন্বয়ক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেছেন। মামলায় সাবেক এমপি, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬৭ জনের নাম উলে­খ করা হয়েছে। বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।