খুলনা | শনিবার | ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২

একই বৃন্তে দু’টি ফুল “উল্লেসিত খুলনার বিচারাঙ্গণ”

এড.এম মাফতুন আহমেদ |
০১:০৯ এ.এম | ১১ এপ্রিল ২০২৫


এক সময়ে দেশের দক্ষিণ জনপদ খুলনা অঞ্চলে বিচারের বাণী নিভৃতে কেঁদে উঠেছিল। সৎ আদর্শিক বিচারক থাকা সত্তে¡ও তাঁরা ছিলেন অসহায়, নীরব, নির্বিকার। আজ হাসতে হাসতে প্রত্যাশিত বিচার পেয়ে আনন্দে উলে­সিত হয়ে আশার বাণী নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন স্ব স্ব গন্তব্যে।  জেলার কর্ণধর দুই বিচারক মহানগর দায়রা জজ শরীফ হোসেন হায়দার, জেলা ও দায়রা জজ চাঁদ মোহাম্মদ আব্দুল আলিম আল রাজি-এর আদালত হতে প্রতিদিন পাচ্ছেন ন্যায়বিচার। দুই বিচারকের বিরুদ্ধে বিচার প্রার্থীদের নেই কোন অভিযোগ। প্রকৃত অর্থে তাঁরা নির্লোভ, নির্মোহ। একই সঙ্গে অন্যান্য আদালতগুলোর প্রতি রয়েছে কঠোরভাবে নজরদারি।
উলে­খ্য ৫ আগস্ট গণআন্দোলন তদপরবর্তী মহানগরসহ খুলনা জেলা ছিল জনতার উত্তাল। সেদিন মহানগর দায়রা জজ শরীফ হোসেন হায়দারের ভূমিকা ছিল প্রসংশনীয়। একদিকে জেলা কারাগারে শত-শত রাজনৈতিক নেতা-কর্মী। আর অন্যদিকে অস্ত্রের ঝনঝনানি। তৎকালীন ফ্যাসিস্ট-এর দোসর জেলার সিনিয়র এক বিচারক উক্ত তারিখে ছিলেন লাপাত্তা। প্রকান্তে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বাঁচানোর জন্য তার ছিল প্রকাশ্য দম্ভগ্নি।  
সেই ক্লন্তিকালে মহানগর দায়রা জজ ছিলেন তিনি কিংকর্তব্যবিমুঢ়। নিলেন স্বীয় মেধাবলে বলে বিচারিক এক কঠিন সিদ্ধান্ত। দিলেন বিপ্লব অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে জেল থেকে মুক্তি। প্রতিরোধ করলেন কৌশলে জেলা কারাগারে রক্ষিত শত-শত আগ্নিয় অস্ত্র। তা না হলে আজকের খুলনা বিভাগ হতো নরসিংদীর মতো জনতার হাতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানী। খুলনা হতো রক্তাক্ত নগরী। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা তেড়ে আসছিল আদালত আঙ্গিনার দিকে। হাজারো ছাত্র-জনতার হাতে পরিণত হতো ১০ তলা ভবন ধ্বংসের স্তূপে। তিনি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে  সেদিন সকলের সহযোগিতায় রক্ষা করেছিলেন খুলনা মহানগর দায়রা জজ শরীফ হোসেন হায়দার। তিনি খুলনার বিচারঙ্গনে সার্ভিসের দিক থেকেও সবচেয়ে সিনিয়র একজন বিচারক। জাতি-ধর্ম, দলমত নির্বিশেষে তার প্রতি আস্থা রেখেছে। খুলনার ইতিহাসে সত্যিকার তিনি একজন বিচারিক কর্মকর্তা। সর্বস্তরে মণিকুঠায় স্থান করে নিয়েছেন।  
উলে­খ্য খুলনার বর্তমান জেলা ও দায়রা জজ সাতক্ষীরা দায়রা জজ হিসেবে তখন কর্মরত ছিলেন। বিপ্লবের ৩ মাস পর তিনি খুলনায় বদলী হয়ে আসেন। সবার মুখে তিনি সৎ নির্মোহ একজন কর্মঠ বিচারক। 
খুলনার বিচারঙ্গনে মানুষ আস্থা রেখেছেন এ দুই বিচারকের প্রতি। আইনজীবী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের বিচার প্রার্থীদের ন্যায় সঙ্গত চাওয়া-পাওয়া পূরণ করে চলেছেন। এ রকম বিচারক দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খুঁজে খুঁজে বের করে পোস্টিং দিলে এদেশে বিচারঙ্গনে বিচারের বাণী নিভৃতে আর কাঁদবে না?