খুলনা | শনিবার | ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২

সুন্দরবন ও কক্সবাজারে বনদস্যু আতঙ্ক কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

|
১২:১৬ এ.এম | ১৬ এপ্রিল ২০২৫


সুন্দরবন ও কক্সবাজার এলাকায় বনদস্যুদের উৎপাত অনেক বেড়ে গেছে। জেলে, বাওয়ালি, মৌয়ালসহ বিভিন্ন পেশার লোকজনের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেককে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায় করছে।
অনেককে হত্যাও করছে। গতকাল গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সুন্দরবন ও কক্সবাজার এলাকায় যে দেড় শতাধিক জলদস্যু অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছিল, তারাও আবার নতুন করে দস্যুতায় নেমেছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে সুন্দরবনে নতুন করে অন্তত ১০টি বনদস্যু বাহিনী গড়ে উঠেছে। গত দুই মাসে সুন্দরবনে অন্তত ১৫০ জন জেলেকে অপহরণ করে ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম উল হক বলেন, ‘২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবন দস্যুমুক্ত ঘোষণা হওয়ায় এ অঞ্চলের জেলেরা ভালোই ছিল, কিন্তু স¤প্রতি আবারও বন ও জল দস্যুদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের অধীন এলাকাগুলো মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা বিধান, জলদস্যু ও বনদস্যু দমন এবং নিরাপদ সুন্দরবন নিশ্চিত করতে ২৪ ঘণ্টা টহল অব্যাহত রাখা হয়েছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা আবারও জলদস্যুমুক্ত করব।’ জানা যায়, সর্বশেষ গত বুধবারও ছয়জন নারীসহ ৩৩ জন জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে।পরে কোস্ট গার্ড তৎপর হয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
বরগুনার সকিনার মোহনাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ডাকাতের কবলে পড়া চারটি ফিশিং ট্রলারসহ ৬৭ জন জেলেকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। শুক্রবার বিকেলে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম উল হক এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ২ এপ্রিল বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থেকে চারটি ফিশিং ট্রলার (এমভি তারেক, আব্দুল­াহ তুফান, এমভি মা ও জুনায়েদ ইসলাম) ৬৭ জন জেলেসহ মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে গভীর সমুদ্রে যায়। এরপর গত ৯ এপ্রিল আনুমানিক রাত ১১টায় বরগুনার তালতলী উপজেলাধীন সকিনার মোহনাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুরা ট্রলারগুলোতে আক্রমণ করে।এতে দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হন এবং যাওয়ার আগে জলদস্যুরা ট্রলারগুলোর ইঞ্জিন বিকল করে দেয়। পরে ১০ এপ্রিল দুপুর ১২টায় ট্রলার মালিক সেলিম চৌধুরী বিষয়টি কোস্ট গার্ডকে জানান। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড স্টেশন পাথরঘাটার একটি উদ্ধারকারী দল অতি দ্রুত ওই এলাকায় যায় এবং চারটি ফিশিং ট্রলারসহ ৬৭ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে জাহিদ হাসান (২৬) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর দাবি, সুন্দরবনের গহিনে দুই দল বনদস্যুর গোলাগুলির মধ্যে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন। এখন খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। প্রতিনিয়ত এ রকম অনেক ঘটনা ঘটছে।
জেলে, মৌয়ালদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও সুন্দরবন ও কক্সবাজারে প্রচুর পর্যটক যাওয়া-আসা করে। অর্থনীতিতে তারও বড় অবদান আছে। জলদস্যুদের উৎপাত বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।