খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১১ বৈশাখ ১৪৩২

কুয়েটে দিনভর একের পর এক ঘটনা

শিক্ষা উপদেষ্টার অনুরোধ, রাখলো না ছাত্ররা : মব কালচার করে ভিসি অপসারণ মানবে না শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৫৫ এ.এম | ২৪ এপ্রিল ২০২৫


খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) বুধবার দিনভর চলেছে একের পর এক ঘটনা। সকালে আসেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সি আর আবরার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিষদের বারান্দায় অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি যতো প্রকার অনুরোধ আছে সবই করেন এবং সকল আশ্বাস দেওয়ার পরও ছাত্ররা অনশন ভাঙেনি। এরপর আসে ইউজিসি’র সদস্যবৃন্দ। ইউজিসি’র সদস্যরা পুরো ঘটনার তদন্তে নেমে পড়েন। অন্যদিকে দুপুরে প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, মব কালচার করে ভিসি অপসারণের দাবি অযৌক্তিক। দোষী প্রমাণিত না হওয়ার আগে ভিসি অপসারণ মেনে নেবে না শিক্ষকরা। প্রয়োজনে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখবে শিক্ষকরা।
এদিকে কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকালে কুয়েটে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। এ সময় তিনি তদন্ত কমিটির ওপর আস্থা রেখে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু ভিসির পদত্যাগ ছাড়া আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন না বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে অল্প দিনের মধ্যে সমাধান করা হবে। প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা অপরাধ সংঘটিত করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।  
উপদেষ্টা বলেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়, আইন মেনেই সবকিছু করার চেষ্টা করা হবে। শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরে আসতে হবে। ছাত্রদের বহিষ্কার আদেশ ও মামলা তুলে নেওয়ার আশ্বাস দেন। সব সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের নিদের্শনা দেন উপদেষ্টা। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে তা অচিরেই বাস্তবায়িত হবে। উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের অনশন থেকে সরে আসার অনুরোধ জানান।
এ সময় খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ অনশনরত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অপর দিকে দুপুরে কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কুয়েট শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন, চাপ দিয়ে উপাচার্যকে অপসারণ করা হলে তা মেনে নেওয়া হবে না। অন্যথায় অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দেন তারা। এ ছাড়া শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা না বলায় হতাশা প্রকাশ করেন শিক্ষকরা। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আহŸান জানিয়েছেন তারা।
এ সময় কথা বলেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ সাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ ফারুক হোসেনসহ অর্ধশত শিক্ষক।  
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, শিক্ষকদের কথা পৌঁছানো লক্ষ্য। ১৮ ফেব্র“য়ারির ঘটনার জের ধরে আজ পর্যন্ত কুয়েট অশান্ত। উত্তরণের আশানুরূপ দিক নির্দেশনা নেই। শিক্ষা উপদেষ্টা ও ইউজিসির কমিটি তদন্ত করছে। আমরা কষ্ট নিয়ে এ আয়োজন করছি। ওই ঘটনায় শিক্ষকের মাথা থেকে রক্তও ঝরেছে। শিক্ষকরা ছাত্র ও প্রশাসনের সঙ্গে থেকে সুরাহার চেষ্টা করেছে। ছাত্রদের দাবি ছিল পাঁচটি। তার সবগুলোই যথোপযুক্তভাবে পূরণ করার চেষ্টা করেছে। পরে ৫ দফা ৬ দফায় মোড় নেয়। এটা নিয়ে শিক্ষকরা যৌক্তিক অবস্থান নেয় ও কথা বলে।
তারা বলেন, সময় যতো গড়ায় তত ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। শিক্ষকদের প্রতিটি কাজের ভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত চিত্র আড়াল করা হয়েছে। কুয়েট প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার কারণে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করা হয়েছে। নামাজ পড়তে না দেওয়া, ইন্টারনেট বন্ধ, বিদ্যুৎ পানি বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে। এগুলোর কোনোটাই সত্য নয়। ছাত্রদের মুখোমুখি শিক্ষকরা হওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এগুলোর সুযোগ অন্য কেউ নিতে পারে। বারবার শিক্ষকদের হেয় করা হচ্ছে। শিক্ষকদের বক্তব্য নিয়ে ট্রল করা হয়, শিক্ষকদের অসম্মানিত করা হয়, শিক্ষকদের বার বার নিগৃহীত করা হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন ব্যানারে ঘটনাটি ছড়িয়ে দিচ্ছে। কুয়েটে ফার্স্ট কেস হিসেবে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু কিসের ফার্স্ট কেস।
তারা বলেন, শিক্ষকরা সুনাম রক্ষায় অবিচল থাকবে, এটাকে ব্যাটেল গ্রাউন্ড বানিয়ে সুবিধা নিতে চাওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। অপরাধীদের শনাক্ত ও শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা প্রয়োজন হলে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে রাখবে। শিক্ষকদের আহত করার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে যাবে না। ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরা একমত ভিসির নিয়োগে আমাদের হাত নেই। ওনাকে অপসারণের দায়িত্ব শিক্ষকদের নয়। ছাত্রদের পাঁচটি দাবির সাথে আমরা একমত। এভাবে বলার পরও ছাত্ররা শিক্ষকদের মর্যাদা দেয়নি। কিন্তু ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আমরা শিক্ষকরা কিছু করতে পারি না। আমরা কুয়েটের সুনাম রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে পারি। রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস গঠনে ভিসিকে সময় দেওয়া দরকার ছিল। দাবি বাস্তবায়ন না হলে আমরাও আন্দোলনে নামতে প্রস্তুত। ভিসিকে নিয়োগ দেয় সরকার। সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দোষী সাব্যস্ত হলে ভিসি অপসারণ হোক। দোষী না হলে তিনি অপসারণের সুযোগ নেই। মব কালচারের মাধ্যমে ভিসি অপসারণ হলে দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা শিক্ষকদের।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. আশরাফুল গণি ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেননি। এতে আমরা ব্যথিত হয়েছি। অল্প কয়েকজন মিছিল করলে সাংবাদিকরা নিউজ করেছে যে কুয়েট উত্তাল, অথচ। কুয়েটে শিক্ষার্থী ৫ হাজারেরও বেশি। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের রাজনৈতিক ট্যাগ দিচ্ছে, যা দুঃখজনক। কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী উপাচার্যকে মারধর করেছে, গায়ে থুতু দিয়েছে। কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়েছেন, তাদের নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে। তিনি এসবের বিচার দাবি করেন।
একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে শিক্ষক হয়েছি। অন্য কোথাও চাকুরি করলে ভালো বেতন এবং উন্নত জীবন যাপন করতে পারতাম। কিন্তু বেছে নিয়েছিলাম শিক্ষকতা। তার বিনিময়ে ছাত্র নামধারী কিছু অসভ্যদের দ্বারা আক্রান্ত হতে হবে এমনটি আশা করিনি। 
তিনি বলেন, তারা বিভিন্ন ফেক আইডি খুলে সোস্যাল মিডিয়ায় বুলিং করছে। যা কুয়েটের মর্যাদা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। নানা ভাবে বুলিংয়ের মাধ্যমে অপতথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে নীতি- নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে। আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এরপর তাদের আবার কিভাবে শিক্ষা দেবো। তারপরও ছাত্ররা ফিরে আসলে আমরা ভুলে যাবো। কেননা তারা আমাদের সন্তানের মতো। গত ১৮ তারিখে যা ঘটেছে, তা জনসম্মুখে সঠিক তথ্য আসেনি বলে তিনি জানান।
আরেকজন সিনিয়র শিক্ষক বলেন, তুচ্ছ ঘটনাটিকে পুঁজি করে একটি অদৃশ্য শক্তি কুয়েটের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তিনি বলেন, মহল বিশেষ একটি প্রতিষ্ঠানের ঘটনাটি জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে মার্চ করে মব কালচার তৈরি করছে। তিনি আরও বলেন, প্রথম দিন থেকে কর্তপক্ষ শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার জন্য কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ৫ দফা বা ৬ দফা নয়, ভিসিকে অপসারণই তাদের মূল লক্ষ্য। যার নেপথ্যে অদৃশ্য কোনো শক্তি কাজ করছে।
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সঙ্কট নিরসনে বুধবার দুপুরে জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠক অনুষ্টিত হয়। এ সময় বাইরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। পরে সিন্ডিকেট সভা শেষে জানা যায়, কুয়েটে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে খুলে দেয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি আবাসিক হল।  বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য মোহাম্মদ মাছুদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
অন্যদিকে উপাচার্যের নির্দেশক্রমে রেজিস্ট্রার মোঃ আনিছুর রহমান ভূঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১০১তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম চালু এবং ২ মে আবাসিক হলগুলো খোলার কথা ছিল। তবে বুধবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১০২তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে হলগুলো বিকেলে খোলা হবে।
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে গত সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ৩২ জন শিক্ষার্থী।
গত ১৮ ফেব্র“য়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্র“য়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ইউজিসি প্রতিনিধিদলের সুপারিশের পর সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয় : ‎‎এদিকে কুয়েট উদ্ভূত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলটি দাবিগুলো পর্যালোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস দিয়েছে।
‎এর আগে বুধবার বেলা ১১টার দিকে ইউজিসি প্রতিনিধিদল কুয়েটে পৌঁছায়। তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তনজিমউদ্দীন খান, বুয়েটের অধ্যাপক সাইদুর রহমান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম-সচিব আহমেদ শিবলী।
প্রতিনিধিদলের সসদস্যরা প্রথমেই অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে। তারা অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা চালান। যদিও তারা একজনমাত্র শিক্ষার্থীকে অনশন থেকে সরিয়ে আনতে সফল হন। অন্য শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যেতে দৃঢ় থাকেন।  ‎পরবর্তী সময়ে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে এক বৈঠক করেন। দীর্ঘ দুই ঘণ্টার এ বৈঠকে শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর সংঘটিত হওয়া হামলা, তাদের আন্দোলন ও দাবিগুলো তুলে ধরেন। পরে ইউজিসি প্রতিনিধি সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলেন।
তবে কুয়েটের আন্দোলনকারী ও অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করা শিক্ষার্থীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অনশনরত ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র গালিব ইফতেখার রাহাত বলেন, ‘ভিসির পদত্যাগ কিংবা অপসারণের একদফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা মরে যাবো, তবে অনশন থেকে উঠবো না।’
ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্ব›েদ্বর জেরে গত ১৮ ফেব্র“য়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্র“য়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
১৪ এপ্রিল রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ১৮ ও ১৯ ফেব্র“য়ারির সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে এবং আবাসিক হলগুলো ২ মে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা ১৫ এপ্রিল দুপুরে নিজেরাই একের পর এক হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন।