খুলনা | শুক্রবার | ২৫ এপ্রিল ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২

কেসিসি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে মঞ্জুর করা মামলার শুনানি ৪ মে

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০২:২০ এ.এম | ২৫ এপ্রিল ২০২৫


২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দায়ের করা মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৪ মে অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন বিবাদী পক্ষকে আদালতে হাজির হওয়ার দিন ধার্য করেছেন খুলনা যুগ্ম-জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক খুরশীদ আলম। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানির দিন ছিল। তবে মামলার শুনানির দিন ছয় বিবাদীর কেউই আদালতে হাজির হননি বলে জানিয়েছেন মামলার আইনজীবী এড. গোলাম মাওলা।
তিনি বলেন, সে সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ এবং তাদের মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের কর্মী বাহিনী ১৫ মে ভোট শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সব কেন্দ্র দখল করে নিয়ে নৌকা মার্কায় জাল ভোট প্রদান করে। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু ওই দিন দুপুরে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচন বয়কট করেন। তিনি আইনের দ্বারস্থ হন। সুদীর্ঘ সময় মামলা চললেও বিবাদীর কেউ আদালতে হাজিরা দেননি। আদালত আজ শুনানি শেষে আগামী ৪ মে পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।
আইনজীবী এড. সৈয়দ মোঃ এহতেশামুল হক জুয়েল বলেন, ২০১৮ সালের ১৫ মে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী ছিলেন তালুকদার আব্দুল খালেক, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী ছিলেন বিএনপি’র খুলনা নগরীর সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রার্থী ছিলেন এস এম শফিকুর রহমান, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী ছিলেন মিজানুর রহমান বাবু যার প্রতীক ছিল কাস্তে, ইসলামী শাসনতন্ত্র দলের প্রার্থী মোঃ মুজাম্মিল হক, তার প্রতীক ছিল হাত পাখা।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং রিটার্নিং অফিসার খুলনার নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পরিচালনা করার বিধান থাকা সত্তে¡ও কোনো নিরপেক্ষ ব্যক্তি ছিলেন না। তারা ওই সময়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্দেশ মোতাবেক দলের মেয়র প্রার্থীর পক্ষ অবলম্বন করেন। তফশিল ঘোষণার শুরু থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত খোলাখুলিভাবে সরকার দলীয় প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের পক্ষ অবলম্বন করেন এবং ওই প্রার্থী স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯, স্থানীয় সরকার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এবং সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০১৬ লঙ্ঘন করা সত্তে¡ও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে সরাসরি তার পক্ষ অবলম্বন করেন। এ কারণে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত সব কর্মকর্তা সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষ অবলম্বন করতে বাধ্য হয়। ৩১ মার্চ কেসিসি নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার পর নির্বাচনী এলাকার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত প্রশাসন ও কর্মকর্তাগণ রিটার্নিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণ থাকা সত্বেও তারা উদ্দেশ্যেমূলক ভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একতরফাভাবে নির্যাতনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যার কারণে তৎকালীন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি রিটার্নিং অফিসার বরাবর ৩ এপ্রিল আবেদন করেন। সেখানে তিনি উলে­খ করেন দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার না করার জন্য।
আইনজীবী এড. জুয়েল আরও বলেন, ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল রিটার্নিং অফিসারের নিকট মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় মৌখিক আপত্তি প্রদান করা সত্তে¡ও ওই কর্মকর্তা কোনো কর্তপাত করেননি। পরে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আপিল করলে তা নামঞ্জুর হয়। আচরণ বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে প্রার্থীর বিরুদ্ধে জরিমানা এবং প্রার্থীতা বাতিলের বিধান আছে, কিন্তু সেই অভিযোগ করা সত্তে¡ও রিটার্নিং অফিসার তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
মহানগর বিএনপি’র সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক শামসুজ্জামান চঞ্চল বলেন, সব থানা ও ওয়ার্ডের সিনিয়র নেতারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে মীর কায়সেদ আলী, জাফরউল­াহ খান সাচ্চু, এড. ফজলে হালিম লিটন, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মেহেদী হাসান দীপু, মহিবুজ্জামান কচি, নিজাম উর রহমান লালু, ইউসুফ হারুন মজনু প্রমুখ।