খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৯ মে ২০২৫ | ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতের মোট আমদানির .০০০০১ শতাংশ আসে পাকিস্তান থেকে, সেটাও বন্ধ করলো দিল্লি

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩৫ এ.এম | ০৪ মে ২০২৫


পাকিস্তান থেকে এবার সব ধরনের আমদানি বন্ধ করলো ভারত। ২০১৯ সালে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। স¤প্রতি পেহেলগামে হামলার পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত সরকার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারত সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তানের পণ্যবাহী যেসব জাহাজ বা অন্য পরিবহন ব্যবস্থা এখনো গন্তব্যে পৌঁছায়নি, সেগুলোর ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ, এগুলো আর ভারতের কোনো বন্দরে মাল খালাস করতে পারবে না। সরকারের বিশেষ অনুমোদন ছাড়া কোনো পণ্য আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে না।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাকিস্তান থেকে উৎপন্ন বা রপ্তানি করা সব পণ্যের আমদানি বা ট্রানজিট অবিলম্বে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হলো। এই নিষেধাজ্ঞা জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থের কারণে আরোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার কোনো ব্যতিক্রমের জন্য ভারত সরকারের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন।’
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যের একমাত্র স্থলপথ পাঞ্জাবের ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত। পেহেলগামে হামলার পর এই পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার সব ধরনের আমদানিও বন্ধ করা হলো।
পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রধানত ওষুধ, ফল ও তৈলবীজ আমদানি হতো। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারত পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমদানি অনেকটাই কমে যায়। সা¤প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এই আমদানির পরিমাণ প্রায় নগণ্য ছিল। সরকারি প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪-২৫ সালে ভারতের মোট আমদানির শূন্য দশমিক ০০০০১ শতাংশের কম ছিল পাকিস্তান থেকে আমদানি।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামের বাইসারান উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলায় নেপালি পর্যটক ও স্থানীয় পনিচালকসহ অন্তত ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসূত্র আছে বলে দাবি করেছে ভারত। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে এরপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক কেবলই খারাপ হয়েছে।
পেহেলগামে হামলার পরপরই ভারত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ১৯৬০ সালের গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করে। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান লাগাতার সীমান্ত সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ভারত এবার সিন্ধু নদের পানি পাকিস্তানকে দেওয়া বন্ধ বা ঘুরিয়ে দিতে পারে। এটি পাকিস্তানের পানি সরবরাহের প্রধান উৎস। এর ফলে কয়েক কোটি পাকিস্তানি নাগরিক প্রভাবিত হতে পারেন।
ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ভিসা বাতিল করেছে। যাঁরা ভারতে ছিলেন, তাঁদেরও ভারত ছাড়ার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মেডিকেল ভিসায় আসা ব্যক্তিরাও ছিলেন। জবাবে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সব দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, এমনকি সিমলা চুক্তিও বাতিল করার হুমকি দিয়েছে। দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কও অবনমিত করেছে।