খুলনা | সোমবার | ০৫ মে ২০২৫ | ২২ বৈশাখ ১৪৩২

স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব

ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা চিকিৎসকের সাথে দেখা করতে পারবেন না

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৯ পি.এম | ০৫ মে ২০২৫


ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা আর সরাসরি হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। ই-মেইলের মাধ্যমে তাদের ওষুধের কথা জানাতে হবে। স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এমন প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

এছাড়া অপ্রয়োজনীয় ওষুধ প্রেসক্রাইব করা বন্ধে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে জেনেরিক নাম লিখতে হবে, এ ধরনের আরও বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এমন আভাস পাওয়া গেছে।

সোমবার (৫ মে) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। বেলা ১১টায় স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন পেশ করবে।

২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর জাতীয় অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে প্রধান করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। আওয়ামী সরকারের পতনের পর নোবেল জয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে একাধিক কমিশন গঠিত হয়। এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি কমিশন তাদের সংস্কার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ফেসবুকে দেওয়ার স্ট্যাটাসে আরও লেখেন, স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে গঠিত সংস্কার কমিশন আজ তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। এটা খুবই প্রত্যাশিত যে তারা এমন কিছু সুপারিশ করবেন যা বাস্তবায়ন করা গেলে স্বাস্থ্য বা খাতে মৌলিক কিছু পরিবর্তন আসবে এবং বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।

যতদূর জেনেছি, এমন একটা সুপারিশ তারা করতে যাচ্ছেন যাতে বলা আছে, ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির প্রতিনিধিরা আর সরাসরি হাসপাতালে ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। ই-মেইলের মাধ্যমে তাদের ওষুধের কথা জানাতে হবে। এটা বাস্তবায়ন করা গেলে ডাক্তারদের সময় বাঁচবে, এক্ষেত্রে ঘুস, উপহার লেনদেন অনেকটাই কমে আসবে এবং কোম্পানিকে খুশি করতে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ প্রেসক্রাইব করা বন্ধ হবে।

প্রেসক্রিপশনে যদি ওষুধের জেনেরিক নাম লিখতে বাধ্য করা যায় সেটাও হবে একটা বড় সংস্কার। আশা করছি কমিশনের রিপোর্টে এই বিষয়েও একটা দিক নির্দেশনা থাকবে।

কমিশন তাদের প্রতিবেদনে স্বাধীন ও স্থায়ী ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কমিশন’ গঠনসহ ৭টি আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছে। প্রস্তাবিত নতুন আইনগুলো হলো— বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কমিশন আইন, বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস আইন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা আইন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন, ওষুধের মূল্য নির্ধারণ এবং প্রবেশাধিকার আইন, অ্যালায়েড হেলথ প্রফেশনাল কমিশনার আইন, বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কমিশনার আইন।  

গত বছরের ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খানকে প্রধান করে ১২ সদস্যবিশিষ্ট স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিশনের সদস্য করা হয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী, অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার, অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান, সাবেক সচিব এস এম রেজা, অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক, ডা. আজহারুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, ডা. আহমেদ এহসানুর রাহমান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী উমায়ের আফিফকে।