খুলনা | শনিবার | ১০ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

প্রাণঘাতী জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস কোম্পানির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, লাল চিঠি বাস্তবায়নে ইউএনও’র গড়িমিসির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০২:৪১ এ.এম | ০৯ মে ২০২৫


ব্যক্তিমালিকাধীন জমির প্রবেশদ্বার আটকে ও সরকারি জমি দখল করে বটিয়াঘাটায় লোকালয়ে চলছে প্রাণঘাতী জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস কোম্পানি। লাল চিঠি দিয়েও বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেই ইউএনও’র। জমি উদ্ধার ও প্রশাসনের দেওয়া লাল চিঠি বাস্তবায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এলাকার ভুক্তভোগীরা। গতকাল বুধবার বটিয়াঘাটার কাশিয়াডাঙ্গার মনিরুল ইসলাম বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বল প্রয়োগের মাধ্যমে অবৈধভাবে বটিয়াঘাটার কিসমত ফুলতলা এলাকায় জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানের মালিক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঘনিষ্টজন মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি লোকালয়ের প্রাণঘাতী এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন টাকার জোর ও আওয়ামী ক্ষমতাবলে। তিনি আরও বলেন, গ্যাস কোম্পানির মালিক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক অবৈধভাবে কোম্পানি স্থাপন করার পাশাপাশি আস্তে আস্তে সরকারী জমি ও স্থানীয় ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি দখল করেছে। প্রথমে তিনি সরকারি জমি ইজারা নিয়ে কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে টিনের বেড়া দিয়ে এমন ভাবে আটকে রেখেছে আমরা প্রবেশ করতে পারছি না। লাল মন্ডল গংদের নিকট থেকে ক্রয়কৃত ১শ’ ৬০ শতাংশ (১.৬০ একর) জমিতে পারিবারিক ভাবে কৃষি কাজ করে থাকি। তবে কোম্পানির জমির প্রবেশদ্বার আটকে রেখেছে। এতে এত বড় জমির চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। নতুন ফসল চাষের জন্য কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না। গ্যাস কোম্পানির মালিক মোঃ আব্দুর রাজ্জাকে বার বার বলা সত্তে¡ও কর্ণপাত করেনি বরং ক্ষমতা দেখিয়েছে আওয়ামী সরকারের। পরে আমরা দ্বারস্থ হয়েছিলাম প্রশাসনের। সেই সময়ও কোনা সুরাহা পাইনি আর সরকার পরিবর্তনের পরও মিলছে না কোনো সমাধান।
মনিরুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, গ্যাস কোম্পানি, যে অবৈধ তা সরকারের নোটিশগুলো বলে দেয়। এই প্রতিষ্ঠানকে বেশ কয়েকটি চিঠি দেওয়া হলেও কর্ণপাত করেননি মালিক। পরবর্তিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি লাল নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে উলে­খ করা হয়, সরকারের বিনা অনুমতিতে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ইজারার চুক্তিভঙ্গ করার কারনে ইজারা চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। গত ২ ফেব্র“য়ারি লিজভুক্ত জমির সকল বেড়া ও স্থাপনা অপসারণ করার কথা বলা হয়। তা না মানায় তিন কর্মদিবসের মধ্যে সবকিছু উচ্ছেদের কথা বলা হয়, লাল নোটিশে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গড়িমসিতে তা এখনো সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনও-কে চিঠি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। সবশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নোটিশ জারি করেছেন বিভাগীয় কমিশনার। সেখানে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত অবৈধ অনুমোদনকৃত কোম্পানি হিসাবে আক্ষা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেননি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। কোম্পানি তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুরোদমে।
তিনি আরও বলেন, গত ৬ মাস ধরে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে কোনো ফলাফল পায়নি। বিভাগীয় কমিশনার-জেলা প্রশাসকের কথাও মানছেন না উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ক্ষতি সাধনের জন্য দ্রুতই জমির প্রবেশদ্বার খোলাটা জরুরি। এছাড়া জনবহুল এলাকায় এমন প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিপূর্ণ। এটি অপসারন করে সরকারের দেওয়া লাল চিঠির আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।